লম্বা আকৃতির প্রতিকেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকায়। আর বড় গোল বেগুনের কেজি চাওয়া হচ্ছে আড়াইশ টাকা পর্যন্ত।
রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোয় পেঁপে ছাড়া প্রায় কোনো সবজির কেজিই ৮০-১০০ টাকার নিচে মিলছে না।
মান ও জাতভেদে আড়াইশ টাকা পর্যন্ত চাওয়া হচ্ছে বেগুনের কেজি; ১০০ টাকা ছাড়িয়েছে করলা ও ঢেঁরসসহ বেশ কিছু সবজির দাম।
স্বস্তি বলতে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা কমেছে। কাঁচা মরিচের দাম কমলেও কেজি ২০০ টাকার ঘরেই রয়ে গেছে। কমেনি ডিমের দামও।
শুক্রবার মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেট, শিয়া মসজিদ সংলগ্ন কাঁচাবাজার, টাউনহল ও মহাখালীর বাজার ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।
এসব বাজারে সোনালী মুরগির কেজি গেল সপ্তাহের চেয়ে ১০ টাকা বেড়েছে। কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৩৩০ টাকা পর্যন্ত, যা আগের সপ্তাহে ছিল ৩২০ টাকা।
ব্রয়লার মুরগির দামও কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। এদিন বিক্রি হয় ১৮০ টাকা থেকে ১৮৫ টাকায়, যা গেল সপ্তাহে ১৭০ টাকাতেও মিলেছে।
সাপ্তাহিক ছুটির দিনে এসব বাজারে পেঁয়াজের কেজি ছিল ৭৫ টাকা, যা গেল সপ্তাহে পড়েছে ৯০ টাকা পর্যন্ত।
শিয়া মসজিদ সংলগ্ন কাঁচাবাজার থেকে পেঁয়াজ কিনছিলেন বেসরকারি চাকরিজীবী মোহাম্মদ আলী।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “৭৫ টাকা দরে পেঁয়াজ কিনলাম। ১৫ দিন আগেই ৫৫ টাকা থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ কিনেছিলাম। ব্যবসায়ীরা আর কত পকেট কাটবে আমাদের?”
একই বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা সবুজ আহমেদ বলেন, “আগের সপ্তাহে তো পেঁয়াজের দাম ৯০ টাকায় উঠেছিল। সিন্ডিকেটের কারণেই পেঁয়াজের দাম বাড়তি। তাছাড়া পেঁয়াজ আমদানি কমেছে। এজন্যও দাম চড়া।”

টাউন হল বাজারে ডিম কিনতে আসেন রিকশা চালক আনোয়ার হোসেন। লাল ডিমের ডজন ১৫০ টাকায় ওঠায় তিনি ব্রয়লারের সাদা ডিম ১৩০ টাকায় কিনে নিয়ে যান।
আনোয়ার হোসেন বলেন, “ ডিমের দামও বাড়তি। আমরা খাব কী?”
একই বাজার থেকে ৩০০ টাকায় দুই ডজন ডিম কেনেন বেসরকারি চাকরিজীবী শাহেলা খাতুন।
বিক্রেতাকে উদ্দেশ করে তিনি বললেন, “দুই সপ্তাহ আগেই তো ১৩০ টাকা ছিল। এর মধ্যেই আপনারা দাম বাড়িয়ে ফেললেন?”
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “বাজারে স্বস্তি নেই। দৈনন্দিন খাবার তালিকায় যা বেশি খাওয়া হয়, সেটার দাম হুটহাট করে বেড়ে যায়।”
বাজারে মসুর ডালের দামও বাড়তি। আগের সপ্তাহের মতো কেজি প্রতি দেশি মসুর ডালের দাম পড়ছে ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা। মোটা দানার ডালের কেজি আগের মতোই ১০৫ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বেগুনের কেজি আড়াইশ
শুক্রবার মহাখালীর কাঁচাবাজারে চিকন লম্বা আকৃতির প্রতিকেজি বেগুন বিক্রি হয় ১২০ থেকে ১৪০ টাকা। আর বড় গোল বেগুনের কেজি চাওয়া হচ্ছে আড়াইশ টাকা পর্যন্ত।

অন্যান্য সবজির দামও চড়া। করলা ও ঢেঁরসের কেজি পড়ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা। এছাড়া পটল ৭০ থেকে ৮০, ধুন্দল ৬০ থেকে ৮০, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা ও কচুর লতি ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এগুলোর বাইরে ঝিঙা ৮০ থেকে ৯০, পেঁপে ২৫ থেকে ৩০ ও কাঁচামরিচ প্রকারভেদে ১৬০ থেকে ২৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
আকৃতিভেদ একেকটি লাউ ৫০ থেকে ৬০ টাকা, টমেটোর কেজি ১৪০ টাকা, গাজর ১৪০ টাকা, দেশি শসা ১০০ টাকা ও হাইব্রিড শসা ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।
লেবুর হালি মিলছে ২০ টাকাতেই। কাঁচা কলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। একেকটি চাল কুমড়া চাওয়া হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা। ধনেপাতার কেজি পড়েছে ৪০০ টাকা।
অন্যান্য সবজির মধ্যে কাঁকরোল ৮০ টাকা, মুলা ৬০ ও মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এক কেজি আলু মিলছে আগের মতোই ২০ থেকে ২৫ টাকায়।
এসব বাজারে লাল শাকের আঁটি ১৫ টাকা বেড়ে ২৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি আঁটি লাউ শাক ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কলমি শাক ১০ থেকে ১৫ টাকা, পুঁই শাক ৪০ থেকে ৫০ টাকা ও ডাটা শাক ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।