ভারতে ইলিশ রপ্তানির খবর ছড়ানোর পর দেখা যায় দেশে ইলিশের দাম বেড়ে গেছে।
হতে সংগৃহীত
দুর্গাপূজা উপলক্ষে শর্তসাপেক্ষে ভারতে ১ হাজার ২০০ টন ইলিশ মাছ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে সরকার, ন্যূনতম দর নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে প্রতি কেজি সাড়ে ১২ ডলার।
সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সরকারের নীতিগত এই সিদ্ধান্তের কথা তুলে ধরেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সোমবার প্রতি ডলারের বিনিময় হার ছিল ১২১ টাকা ৭০ পয়সা। সে হিসেবে প্রতি কেজি ইলিশের ন্যূনতম রপ্তানি দর হবে কমপক্ষে ১ হাজার ৫২১ টাকা ২৫ পয়সা।
ন্যূনতম দর নির্ধারণ করে দিলেও রপ্তানির সর্বোচ্চ সীমা ঠিক করেনি সরকার।
ভারতে ইলিশ রপ্তানির খবর ছড়ানোর পর দেখা যায় দেশে ইলিশের দাম বেড়ে গেছে। প্রতিটি মাছের আকার ও ওজন ভেদে ইলিশের দামের ইলিশের দামের হেরফের হয়ে থাকে।
টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন বাজারে সোমবার প্রতি কেজি ইলিশের দর ছিল ৯০০ টাকা থেকে ২২০০ টাকা। আকার ও ওজনভেদে দামের এই তারতম্য।
যাত্রাবাড়ী আড়তের ইলিশ মাছ বিক্রেতা স্বপন কুমার সরকার সোমবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বাজারে ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের চাঁদপুরের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৩০০ টাকা কেজি।
৯০০ থেকে ১১০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫০০ টাকা কেজি। আর ডিমওয়ালা ইলিশের ওজন দেড় কেজির বেশি হলে প্রতি কেজি সাড়ে ৩ হাজার টাকা এবং ২ কেজির বেশি ওজনের ইলিশ ৪ হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ভারতে ইলিশ রপ্তানিতে আগ্রহীদের আগামী ১১ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টার মধ্যে মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত পদ্ধতিতে আবেদন করতে হবে।
আবেদনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রপ্তানিকারক কোম্পানির হালনাগাদ ট্রেড লাইসেন্স, ইআরসি, আয়কর সার্টিফিকেট, ভ্যাট সার্টিফিকেট, বিক্রয় চুক্তিপত্র, মৎস্য অধিদপ্তরের লাইসেন্সসহ সংশ্লিষ্ট দলিলাদি দাখিল করতে হবে।
দুর্গাপূজায় কলকাতার বাঙালিদের প্রিয় খাবারের একটি বাংলাদেশের সু-স্বাদু ইলিশ মাছ। ২০২৪ সালেও দুর্গাপূজার দুই সপ্তাহ আগে ৩ হাজার টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছিল বাংলাদেশ সরকার।
সে সময়ে ভারতে রপ্তানি বন্ধে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান নোটিস পাঠিয়েছিলেন সরকার ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কাছে।
নোটিসে বলা হয়েছিল, বাংলাদেশের রপ্তানি নীতি ২০২১-২৪ অনুযায়ী ইলিশ মাছ মুক্তভাবে রপ্তানিযোগ্য মাছ নয়। এ অবস্থায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ভারতে ইলিশ মাছ রপ্তানির অনুমতি দিয়ে বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থবিরোধী কাজ করেছে।
আরও বলা হয়, ইলিশ মাছ বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমারসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাওয়া যায়। ভারতের বিশাল ও বিস্তৃত সমুদ্রসীমা রয়েছে, যেখানে ব্যাপকভাবে ইলিশ উৎপাদন হয়। এই বিবেচনায় বাংলাদেশ থেকে ভারতের ইলিশ মাছ আমদানির কোনো প্রয়োজন নেই।
বিষয়টি নিয়ে পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে সরকার ২ হাজার ৪২০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেয়।