এখনো চিকিৎসাধীন রিনা বেগমের আরেক ছেলে তাওহীদ (৭)। তার শরীরের ১৬ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে।
সংগৃহিত
নরসিংদীতে ঘুমন্ত স্ত্রী-সন্তানসহ ছয়জনের শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় দগ্ধদের মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে।
ঘটনার ছয় দিন পর মঙ্গলবার সকালে ও দুপুরে রাজধানীর জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে তাদের মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছেন নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ (অপরাধ) সুপার সুজন চন্দ্র সরকার।
মারা যাওয়া দুজন হলেন- রিনা বেগম (৩৮) ও তার ছেলে ফরহাদ (১৫)। রিনার শরীরের ৫৮ শতাংশ এবং ফরহাদের শরীরের ৪০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল।
এখনো চিকিৎসাধীন রিনা বেগমের আরেক ছেলে তাওহীদ (৭)। তার শরীরের ১৬ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে।
প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন রিনা বেগমের অপর ছেলে জিহাদ (২২), রিনার বোন সালমা বেগম (৩৪) ও তার ছেলে আরাফাত (১৫)।
এর আগে গত বুধবার রাত ৩টার দিকে নরসিংদী সদর উপজেলার চিনিশপুর ইউনিয়নের ঘোড়াদিয়া এলাকায় স্ত্রী রিনা বেগম, সন্তানসহ ছয়জনের শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠে ফরিদ মিয়া (৪৪) বিরুদ্ধে।
ফরিদ মিয়া পেশায় একজন পিকআপচালক ও নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার ইটাখোলায় বসবাস করেন।
মামলা ও স্থানীয়দের বরাতে পুলিশ জানায়, দীর্ঘদিনের সংসার জীবনে ভরণ-পোষণসহ দায়িত্ব পালন না করায় ফরিদ মিয়ার সংসার ছেড়ে সন্তানসহ সদর উপজেলার ঘোড়াদিয়ায় বাবার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন রিনা বেগম। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বাবুর্চির সহযোগি হিসেবে কাজ করে জীবীকা নির্বাহ করতেন তিনি।
তবে সম্প্রতি সংসারে ফিরে যেতে রিনা বেগমকে হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছিল ফরিদ মিয়া। এর জের ধরে বুধবার গভীর রাতে রিনার বসত ঘরে পেট্রোল ছিটিয়ে দিয়ে আগুনে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা চালায় ফরিদ।
এসময় দগ্ধদের আর্তচিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে পালিয়ে যায় ফরিদ।
পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছিল।
পরে শুক্রবার রাতে ফরিদ মিয়াকে একমাত্র আসামি করে নরসিংদী মডেল থানায় মামলা করেন রিনার মা হোসনা বেগম।
পরদিন শনিবার রাত ৮টার দিকে বেলাব থানার বারৈচা এলাকা থেকে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় ফরিদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি কারাগারে রয়েছেন।
নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ (অপরাধ) সুপার সুজন চন্দ্র সরকার বলেন, “নিহতদের লাশ ময়নাতদন্তের পর নরসিংদীতে নিয়ে আসা হচ্ছে। রিনার মায়ের করা মামলাটি এখন হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হবে। ”
