নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশনস কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল)-এর প্রায় ৩০০ কোটি টাকার ‘৫জি রেডিনেস প্রকল্প’ নানা ধরনের জটিলতায় থমকে আছে। প্রকল্পটি বর্তমানে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ, অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্তের কারণে বাস্তবায়নের অনিশ্চয়তায় পড়েছে।
২০২২ সালে অনুমোদিত এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য ছিল দেশে ৫জি প্রযুক্তির জন্য অবকাঠামো প্রস্তুত করা। তবে টেন্ডার প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতার অভাব, টেকনিক্যাল মূল্যায়নে অনিয়ম এবং সম্ভাব্য দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে শুরু থেকেই নানা বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে এটি।
প্রকল্পের টেন্ডার মূল্যায়নে অংশ নেওয়া তিনটি প্রতিষ্ঠানই মানদণ্ড পূরণে ব্যর্থ হয়, তবুও তাদের টেকনিক্যালি উপযুক্ত ঘোষণা করা হয়—যা সরকারি ক্রয়নীতির পরিপন্থী বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠেছে সরকারি উচ্চপদস্থ একজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও, যিনি প্রকল্পের অনুমোদন প্রক্রিয়ায় প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
দুদক ইতোমধ্যে বিষয়টি তদন্তে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করেছে। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান একে ‘স্পষ্ট স্বার্থের সংঘাত’ বলে মন্তব্য করেছেন এবং প্রকল্পটি পুনঃমূল্যায়নের আহ্বান জানিয়েছেন।
অন্যদিকে, প্রশাসনিক দ্বন্দ্বের জেরে প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিটিসিএল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে বদলি ও বরখাস্ত করা হয়েছে।
সব মিলিয়ে, এই টেলিকম প্রকল্পটি এখন রাজনৈতিক চাপ, আমলাতান্ত্রিক স্থবিরতা ও দুর্নীতির অভিযোগের ঘূর্ণিপাকে পড়ে থমকে আছে, যা দেশের প্রযুক্তি অগ্রগতির পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।