পটুয়াখালীতে একসময় ২২০টি রাখাইন পল্লি থাকলেও এখন আছে ৪৪টি। এর মধ্যে কলাপাড়ায় ২৭টি, বরগুনা সদর ও তালতলীতে ১৩টি আর রাঙ্গাবালী উপজেলায় আছে ৪টি।
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার রাখাইনদের একটি গ্রাম ছিল। নাম ছিল ছআনিপাড়া। পায়রা বন্দর নির্মাণের সময় গ্রামটি বিলীন হয়ে গেছে।
দুই শতাব্দীর বেশি সময় ধরে ছআনিপাড়ার মত রাখাইনদের অনেক গ্রামই বিলীন হয়েছে। সবই ‘উন্নয়নের জোয়ারে’ বিলীন হয়নি; কোনো কোনো গ্রাম হারিয়ে গেছে সাগরের ভাঙনে; কোনোটি আবার দখল হয়ে গেছে।
এভাবে রজপাড়া, খেচাপাড়া, পুনোমাপাড়া, দোকাসিপাড়া, আছালত খা পাড়া, তাজেপাড়া, দংকুপাড়া, ফানচিপাড়া, অনন্তপাড়া ও জোজিতংম্বুর মতো অনেক গ্রাম এখন শুধুই ইতিহাস।
যেভাবে বিলীন
মং চো থিন তালুকদার বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের বৃহত্তম বরিশাল অঞ্চলের সভাপতি। তিনি রাখাইন সম্প্রদায়ের।
রাখাইনদের ইতিহাস নিয়ে নিজের সংগ্রহে থাকা পুস্তকের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, বার্মার (মিয়ানমার) রাজা আরাকান রাজ্য দখল করে নিলে ৫০টি পালতোলা নৌকায় ১৫০টির মত পরিবার এখানে আসে। ১৭৮৪ সালের দিকে সাগর পাড়ি দিয়ে প্রথমে বরিশালের সর্বদক্ষিণাঞ্চলীয় উপকূলে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী এলাকায় পদার্পণ করেন তারা।
মং চো থিন বলেন, তখনকার ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানির (ব্রিটিশ সরকারের) আনুকূল্যে তারা ধীরে-ধীরে জনমানবহীন হিংস্র শ্বাপদসংকুল বনভূমিকে চাষযোগ্য ভূমিতে রূপান্তর করেন।
১৯০৮ সালে ব্রিটিশ সরকার প্রথম খেপুপাড়ায় একজন কলোনাইজেশন কর্মকর্তা নিযুক্ত করেন। তখন সমগ্র কলোনাইজেশন এলাকার নাম ছিল ‘দি বাখরগঞ্জ-সুন্দরবন কলোনাইজেশন’। ওই কলোনাইজেশন এলাকায় প্রায় ২৩৭টি রাখাইন গ্রাম গড়ে উঠেছিল।
গত ২৯ জুন থেকে ৩১ জুন পর্যন্ত পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলার চারটি পাড়া ঘুরে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, দখল আর মামলার বোঝা—মূলত এ তিন কারণে এ অঞ্চলে রাখাইন সম্প্রদায়ের মানুষ কমেছে।
স্থানীয়রা বলছেন, ১৯৬৫ সালে এক ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ে রাখাইন অধ্যুষিত এ দুই জেলা। সেসময় এক রাতের মধ্যে অনেকে বানের জলে ভেসে যান। মারা যান রাখাইন সম্প্রদায়ের অনেক মানুষ। অনেক গ্রামই তখন বিলীন হয়ে যায়।
কুয়াকাটার আদিনাম ছিল ‘গাদলা’। পরে এই কুয়ার নাম অনুসারে হয় কুয়াকাটা। এ অঞ্চলের বিভিন্ন গ্রামের নাম পাল্টে যাওয়ার বড়ো চিহ্ন এই কুয়া।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক ‘ফ্রন্টিয়ার্স ইন মেরিন সায়েন্স’ নামের বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকীতে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে প্রকাশিত গবেষণায় দেখা যায়, ১৯৮৯ ও ২০২০ সালের মধ্যে প্রতি বছর শূন্য দশমিক ৩২ বর্গকিলোমিটার করে মূলভূমির দিকে সরে এসেছে কুয়াকাটা উপকূলের সীমানা।
“আমার জন্ম তুলাতলী পাড়ায়। সেখানে ১২৫টি পরিবার ছিল। ১৯৬৫ সালের বন্যার পর দুটি পরিবারের ছয়জন বেঁচে ছিলেন। তখন অনেক রাখাইন মারা যায়; অনেক গ্রামই বিলীন হয়ে যায়,” বলছিলেন কুয়াকাটা শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধবিহারের অধ্যক্ষ ইন্দ্রবংশ থেরো।
তিনি বলেন, “অনেক জমিজমার কাগজপত্র সে দুর্যোগের সময় হারিয়ে যায়। সেই সুযোগেই অন্য সম্প্রদায়ের মানুষ ধীরে-ধীরে দখল নেওয়ার সুযোগ পায় এবং দখল নিতে থাকে। এরপর থেকে আস্তে-আস্তে রাখাইন কমে যায়। যারা ছিল, তারাও আস্তে আস্তে অন্য দিকে চলে যায়।
“তারা চিন্তা করে, এখানে প্রতিবছর জলোচ্ছ্বাস হয়, খাবার নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আমরা এখানে কী করব। বেড়িবাঁধ হওয়ার পর ধীরে-ধীরে বাঙালিরা এসে বসতি গড়ে।”
ইন্দ্রবংশ বলছেন, অবস্থা যা দাঁড়িয়েছে, ধীরে ধীরে দখল করে হয়ত তাদেরও তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হবে।
তার দাবি, তাদের মামলাগুলো যেন নিষ্পত্তি করা হয়।
কীসের মামলা?
তখনকার বন্যা পরিস্থিতি তুলে ধরে মং চো থিন তালুকদার বলেন, “এমন অবস্থা হয়েছিল তখন, আমরা শুনেছি বাপ-দাদাদের কাছ থেকে যে বন্যায় একটা ঘরও অবশিষ্ট ছিল না কিছু কিছু পাড়ায়। সব সাগরে ভেসে গেছে। তখন এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা ভুয়া রেজিস্ট্রি বালাম তৈরি করে আমাদের জমিজমা দখল করে নেয়।
“এমনও হয়েছে যে, এক একর জমি বিক্রি করতে চেয়েছে অভাবে পড়ে, লিখে নিয়ে গেছে দুই একর-তিন একর। অনেকে ভাষাও জানত না তখন। এরকম নানা কারণে দিনে-দিনে রাখাইনরা সংখ্যায় কমছে।”
তিনি বলেন, “পায়রা বন্দর, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ইত্যাদির কারণে জায়গার দামও বেড়েছে বহু গুণ। যারা সুযোগসন্ধানী, তার তো বসেই আছে। যেখানে ফাঁক পায়, ঢুকে পড়ে। এভাবে আমাদের শ্মশান, রিজার্ভ পুকুর, আর বৌদ্ধবিহারগুলো আংশিক বা পুরোপুরি দখল হচ্ছে।”
জমি হারিয়ে মামলা করেন অনেক রাখাইন। সেই মামলা চালাতে গিয়ে নিঃস্ব হয়ে যান অনেকে। রাখাইন গ্রামগুলো বিলীন হওয়ার দ্বিতীয় কারণ এটি।
কুয়াকাটা শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধবিহার।
বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মং ম্যা বলেন, “যেসব রাখাইন এখনও টিকে আছে এখানে, প্রায় সব পরিবারই এক বা একাধিক ভূমি সংক্রান্ত মামলায় লড়ছে।”
বাংলাদেশের বিচারিক ব্যবস্থায় ভূমি সংক্রান্ত মামলাগুলোকে দেওয়ানী মামলা বলা হয়। এসব মামলার রায় পেতে লাগে বছরের পর বছর। ফলে মামলা চালানোর মতো খরচ যোগাতে না পেরে অনেককে পাড়ি দিতে হয়েছে মিয়ানমারে; তাদের আদিভূমিতে।
সপ্তাহখানেক আগে বরগুনার তালতলী উপজেলার লাউপাড়া গ্রামে গিয়ে এমন কয়েকজনের ভিটা দেখা গেল। লাউপাড়া পল্লীর মাতবর চিং তেন মংয়ের কথার সঙ্গেও মিল পাওয়া গেল মামলার তথ্যের।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের অনেককেই জায়গা সংক্রান্ত মামলা লড়তে হচ্ছে বহু বছর ধরে। এই পাড়ার কয়েকজন জায়গাজমি সংক্রান্ত মামলা চালাতে না পেরে নিঃস্ব হয়ে মিয়ানমারের রোসাং চলে গেছেন।”
মিয়ানমারের রোসাং বলতে রাখাইন রাজ্যকেই বোঝাতে চেয়েছেন তিনি, যা আরাকান নামেও পরিচিত ছিল।
এর বাইরে সবশেষ যে কারণটি রাখাইনদের টিকে থাকায় প্রধান হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে, সেটি হচ্ছে দখল। নিজেদের কৃষি জমি তো বহু আগে গেছেই, এখন বেহাত হচ্ছে বসতভিটাও।
মং ম্যা কাজ করছেন কারিতাসের তালতলী ও কলাপাড়া উপজেলার ল্যান্ড অ্যান্ড কেইস মনিটরিং অফিসার হিসেবে।
তিনি বলেন, একসময় ২২০টি রাখাইন পল্লি থাকলেও এখন আছে মাত্র ৪৪টি পল্লি। এর মধ্যে কলাপাড়ায় ২৭টি, বরগুনা সদর ও তালতলীতে ১৩টি আর রাঙ্গাবালী উপজেলায় আছে ৪টি। একসময় এ অঞ্চলে ৫০ হাজারের বেশি রাখাইন সম্প্রদায়ের মানুষ ছিল। এখন টিকে আছে সাকুল্যে আড়াইহাজার।
“রাখাইনরা সংখ্যালঘু থেকে ‘সংখ্যা শূন্যের’ পথে। এখন মাত্র আড়াই হাজারের মত রাখাইন আছে। দেওয়ানী মামলা পরিচালনা করতে ৩০ থেকে ৪০ বছর লাগে। আবার তারা আর্থিকভাবেও শক্তিশালী নন, ফলে এদের আসলে কিছুই করার থাকে না।”
যে জীবন যাযাবরের
সরেজমিন অনুসন্ধান ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে বোঝা গেছে, ওই উপকূলে বিগত ২০০ বছরে গড়ে ওঠা রাখাইন গ্রামগুলোর অন্তত ৯০ শতাংশই বাঙালি গ্রামে পরিণত হয়েছে। রাখাইনদের জনসংখ্যা কমেছে ৯০ শতাংশের বেশি। ৪৪টি পল্লিতে টিকে আছে আড়াই হাজারের মত রাখাইন।
পায়রা বন্দরসংলগ্ন ২ নম্বর টিয়াখালী ইউনিয়নের ছআনিপাড়া রাখাইন পল্লিতে প্রায় ৭০ বছর আগে ৬৫টি রাখাইন পরিবার ছিল। সবশেষ ছিল ছয়টি পরিবার। ২০২৪ সালের নভেম্বরে পায়রা বন্দর নির্মাণের জন্য অধিগ্রহণে এই ছয়টি পরিবারও ভিটাহারা হয়, সঙ্গে বিলুপ্ত হয়ে যায় রাখাইনদের আরও একটি গ্রাম।
রাখাইনদের সব পাড়াতেই একটি বট বৃক্ষ থাকে। এই বৃক্ষকে তারা দেবতা মনে করে পূজা করে।
এই গ্রামের এক সময়ের গনসে মাতব্বরের ছেলে চিং দামো রাখাইনের কণ্ঠে শোনা গেল সেই আক্ষেপ। এখন তিনি এবং আরেকটি পরিবার কলাপড়ায় ভাড়া বাসায় থাকেন। বাকি চার পরিবার অন্য পাড়ায় গিয়ে যাযাবরের জীবনযাপন করছে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “বলতে খুবই কষ্ট হচ্ছে; আমাদের জীবনটা হয়ে গেছে যাযাবরের। যখন ভূমি অধিগ্রহণ হল, তখন পুনর্বাসনের আগ পর্যন্ত মাসোহারা দেওয়ার কথা বলা হল। প্রথম পাঁচ মাস ৫ হাজার টাকা করে পাওয়ার পর গেল ৩ বছরে কোনো টাকা পাইনি।”
তিনি বলেন, “বন্দর কর্তৃপক্ষ আমাদের খাসজমি খুঁজতে বলেছে। সেটা তো সরকার খুঁজবে। পরে একটা রেকর্ড করা জমিতে যেতে বলেছে। মাত্র ৪০ শতাংশ জমিতে ৬ পরিবারকে যেতে বলেছে। একসময় আমাদের শ্মশানই ছিল এক একর।
“এখন আমাদের পল্লিতে তিনটি জিনিস লাগবেই— রিজার্ভ পুকুর, শ্মশান আর উপাসনালয়। আমরা অন্তত এক একর জমি চেয়েছি। না হলে তো এগুলো কিছুই থাকবে না।”
আদিবাসী অধিকারকর্মী মেইনথিন প্রমিলা জন্মসূত্রে কলাপাড়ার রাখাইন পরিবারের মেয়ে। রাঙ্গাবালীতে ছিল তাদের আদি গ্রাম। সেই গ্রাম সাগর গিলে খেয়েছে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “আগে থেকেই দুই জেলা মিলে অনেকগুলো গ্রাম বিলীন হয়ে গেছে। সবশেষ পায়রা বন্দর নির্মাণের সময় ছআনিপাড়া বিলীন হয়ে যায়। আরও একটি গ্রাম কমল। আমাদের অস্তিত্ব রক্ষাটা এতই কঠিন হয়ে পড়েছে।
“এটা খুবই করুণ বিষয় আমাদের জন্য। আরেকটি কথা, মোটা দাগে যদি বলি, যে সরকারই আসুক, দখলদারের রূপটা পরিবর্তন হয়, কিন্তু দখলের পরিবর্তন হয় না।”
মামলার ভারে পিষ্ট
স্থানীয় রাখাইন সম্প্রদায়ের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, এখানকার প্রায় প্রতিটি রাখাইন পরিবারই ভূমিসংক্রান্ত একাধিক মামলায় জড়িয়ে আছেন। দীর্ঘকাল ধরে চলছে জমি ফিরে পাওয়ার আইনি লড়াই।
কারিতাসের তথ্য অনুযায়ী, ভিটে বাদ দিলে ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ রাখাইন বর্তমানে ভূমিহীন। ২০০৭ সাল থেকে গত ১৮ বছরে ১১২টি মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে। কিছু মামলার রায় রাখাইনদের পক্ষে গেছে, কিছু রয়ে গেছে কাগজে-কলমে।
বর্তমানে শুধু তালতলীতেই ১০০টির বেশি মামলা চলমান। আর কলাপাড়ায় ১৩০ থেকে ১৪০টি মামলা চলমান।
মং ম্যা বলেন, “স্থানীয় প্রশাসন যদি রাখাইনদের জন্য আলাদা একটা ডেস্ক করে এবং মাসে অন্তত একবার বসে তাদের কথা শোনে এবং নজরদারি করে, তাহলে মনে হয় রাখাইনদের যতটুকু ভূমি আছে, সেগুলো রক্ষা পাবে।”
পটুয়াখালী আর বরগুনার উপকূলীয় অঞ্চলে ১৭৮৪ সালের দিকে সাগরপথে মিয়ানমার থেকে এসে প্রথম বসতি গড়তে শুরু করে রাখাইনরা। কালক্রমে এখন এই জাতিগোষ্ঠী বিলুপ্তির পথে৷
গ্রাম নেই, নামও নেই
বিলীন হওয়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পাল্টে গেছে রাখাইনদের গ্রামগুলোর নাম। কোনো এক রাখাইন মাতবরের নামে যে পাড়াটির নাম ছিল ‘হুইচ্যানপাড়া’, কালের বিবর্তনে উপকূলীয় শহর কুয়াকাটার এই পাড়াটির নাম হয়ে গেছে হোসেনপাড়া। খোদ সরকারের প্রত্নতত্ন অধিদপ্তরই এই নাম ব্যবহার করছে।
ইন্দ্রবংশ বলছিলেন, নাম পালটে যাওয়ার সবচেয়ে বড় উদাহরণ হতে পারে কুয়াকাটা।
তিনি বলেন, “একেবারে শুরুর দিকে এই অঞ্চলের নাম ছিল ‘গাদলা’। এর অর্থ হচ্ছে যেখানে মাছের নৌকা এসে ভেড়ে; অর্থাৎ ঘাট। পরে যখন রাস্তাঘাট হল, উন্নত হল, তখন এখানে সূর্যোদয়-সূর্যাস্ত দেখার জন্য পর্যটকরা আসতে শুরু করে। এটাকে কেন্দ্র করে যখন কুয়াকাটা জনপ্রিয় হয়ে ওঠে, তখন এলাকার গণ্যমান্যরা চিন্তা করল, গাদলা নামটা কেমন!”
তিনি বলেন, “একসময় এ অঞ্চলে লবণাক্ত পানির জন্য খাবার পানির অভাব ছিল। তখন মিঠা পানির জন্য অনেক কুয়া খনন করা হয়। এই বৌদ্ধবিহার ঘেঁষে যে কুয়া, সেটায় মিঠা পানি পাওয়া গিয়েছিল। তখন এ অঞ্চলের মানুষ বহু বছর এই কুয়ার ওপর নির্ভরশীল ছিল।
“ছোটবেলায় আমরা দেখেছি, এই পাড়ার মাতবর একটা চেয়ার নিয়ে বসে থাকত, এই পানিটাকে সবাই রশি দিয়ে তুলে নিত। তখন এই কুয়ার নামেই কুয়াকাটার নামকরণ করা হয়।”
মং ম্যা জানালেন, এভাবেই দোকাসিপাড়ার নাম পরিবর্তন করে দোভাষীপাড়া, আছালতখা পাড়ার নাম পরিবর্তন করে আদালত খান, থঞ্জুপাড়াকে করা হয়েছে অঞ্জুপাড়া; আর অংথেনপাড়াকে করা হয়েছে অনন্তপাড়া।
“এভাবেই অনেকগুলো গ্রামের নাম পাল্টে গেছে। নাম পাল্টে গেলেও যেন অবশিষ্ট গ্রামগুলো টিকে থাকে, এটাই আমাদের চাওয়া।”