এর আগেও ট্রাম্পকে সমর্থন করার জন্য অর্থ ব্যয় করেছেন প্রযুক্তি প্রধানরা। ট্রাম্পকে কোনো কারণে ২৪ ক্যারেট স্বর্ণের মূর্তিও উপহার দিয়েছিলেন অ্যাপলের সিইও টিম কুক।
সংগৃহিত
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে বিলাসবহুল বলরুম তৈরি করছেন আর এতে অর্থ সহায়তা দিচ্ছে এমন সব কোম্পানির তালিকা প্রকাশ করেছে দেশটির ফেডারেল সরকার।
আমেরিকান আর্থিক ও ব্যবসায়িক সংবাদসাইট বিজনেস ইনসাইডার প্রতিবেদনে লিখেছে, এ তালিকায় বড় বড় প্রযুক্তি কোম্পানিও রয়েছে, যেখানে ৯০ হাজার বর্গফুট আয়তনের এই বলরুম নির্মাণে অর্থ দিচ্ছে অ্যামাজন, অ্যাপল, গুগল, মেটা ও মাইক্রোসফটসহ আরও অনেক কোম্পানি।
কেবল বড় প্রযুক্তি কোম্পানিই নয়, বরং এ বলরুম খরচে হাত লাগিয়েছে প্রতিরক্ষা খাতের নানা কোম্পানিও। ‘লকহিড মার্টিন’ ও ‘প্যালান্টিয়ার’-এর মতো কোম্পানি যেমন অর্থ দিচ্ছে, তেমনই এতে অর্থ সহায়তা করছেন ফেইসবুকের উদ্যোক্তাদের অন্যতম উইঙ্কলভস যমজ দুই ভাই ও ‘ডমিনো সুগার’-এর মালিক হোসে ফানহুলের মতো ধনী ব্যক্তিরাও।
“ট্রাম্পের শখের বলরুম নির্মাণে অর্থ সহায়তা দেওয়ার পুরো তালিকাটি দেখলে যে কারো মনে হয়, এ যেন ধনকুবের ও প্রভাবশালীদের অর্থ দেওয়ার প্রদর্শনী” বলে প্রতিবেদনে লিখেছে প্রযুক্তি বিষয়ক সাইট এনগ্যাজেট।
“বড় বিভিন্ন কোম্পানি ও ধনকুবেরদের আমরা সাধারণত ‘দয়ালু’ ও ‘নিঃস্বার্থ’ ভাবি। তবে তারা হয়ত এই সাহায্যের বিনিময়ে কোনো সুবিধাও পেতে চাইবেন।” ‘ইউনিভার্সিটি অফ কলম্বিয়া’র অধ্যাপক রিচার্ড ব্রিফল্ট বলেছেন, “দাতাদের অনেকের সঙ্গেই সরকারের ‘বড় রকমের’ ব্যবসায়িক সম্পর্ক রয়েছে। ফলে তারা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বলরুমে অর্থ দিচ্ছেন কেবল সদিচ্ছা থেকে নয়, বরং ভবিষ্যতে সরকারের কাছ থেকে সুবিধা পাওয়ার আশায়।”
ব্রিফল্ট বলেছেন, “আমার ধারণা, বিষয়টি সরাসরি ‘তুমি আমাকে দাও, আমি তোমাকে দেব’ এমন ধরনের চুক্তি নয়। তবে এটি সম্ভবত ‘তুমি যদি এটা দাও, আমি তোমার প্রতি সদয় থাকব।’ আবার উল্টো দিক থেকেও হতে পারে, ‘তুমি যদি অনুরোধ পাওয়ার পরও না দাও তবে আমি তোমার প্রতি ভালো মনোভাব দেখাব না।’”
তিনি আরও বলেছেন, “বিষয়টি এক ধরনের তেল দেওয়ার মতো ব্যাপার, যেখানে অনুদান দিয়ে প্রভাব অর্জনের চেষ্টা চলছে। কিছুটা ক্ষেত্রে দেখা যায়, ট্রাম্প যেভাবে অনুদান আদায় করছেন, তাতে একটা চাপ বা জবরদস্তির বিষয়টিও রয়েছে।”
ট্রাম্প নিজে ব্যক্তিগতভাবে এ অর্থদাতাদের রাজি করানোর চেষ্টা করেছেন। মার্কিন বাণিজ্য প্রকাশনা ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল প্রতিবেদনে লিখেছে, গত সপ্তাহে হোয়াইট হাউসের ইস্ট রুমে এক তহবিল সংগ্রহের নৈশভোজ অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে আগের উল্লেখিত কয়েকটি কোম্পানির প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন। এ অনুষ্ঠানের নাম ছিল ‘মহান হোয়াইট হাউস বলরুম প্রতিষ্ঠা’।
প্রকাশনাটি আরও লিখেছে, এ প্রকল্পের জন্য অর্থ সংগ্রহ করতে হোয়াইট হাউস ও ভার্জিনিয়ায় তার নিজের ক্লাবে একাধিক বৈঠক করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
তবে বড় বিভিন্ন প্রযুক্তি কোম্পানির জন্য এটি নতুন কোনো ঘটনা নয়। এর আগেও ট্রাম্পকে সমর্থন বা সম্মান দেখানোর জন্য অর্থ ব্যয় করেছেন তারা। একবার ট্রাম্পকে কোনো কারণে ২৪ ক্যারেট স্বর্ণের মূর্তিও উপহার দিয়েছিলেন অ্যাপলের সিইও টিম কুক।