গত বছরও সেতুর পশ্চিম পাশ ধসে গিয়েছিল বলে জানান স্থানীয়রা।
হতে সংগৃহিত
টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ধলেশ্বরী নদীর উপর নির্মিত সেতুর সংযোগ সড়ক ধসে গেছে। এতে পাঁচটি ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
মঙ্গলবার রাতে উপজেলার তোরাপগঞ্জ সড়কের চারাবাড়ি এলাকার সেতুর পশ্চিম অংশ ভেঙে যায় বলে জানান স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) টাঙ্গাইল সদর উপজেলা প্রকৌশলী জাকির হোসেন।
তিনি বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড, এলজিইডি, সদর উপজেলা পরিষদের যৌথ উদ্যোগে বুধবারের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয়রা বলছেন, সংযোগ সড়ক ধসে যাওয়ায় সদর উপজেলার কাতুলী, হুগড়া, কাকুয়া, মাহমুদ নগর ও নাগরপুরের ভাররা ইউনিয়নে লক্ষাধিক মানুষের দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল-কলেজসহ বিভিন্ন অফিস-আদালতে যাতায়াতে ব্যাঘাত ঘটছে।
সেতুর উপর দিয়ে চরাঞ্চলের কৃষিপণ্য, তাঁত শিল্পের কাঁচামাল ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য আনা-নেওয়া করতে প্রতিদিন শতাধিক ট্রাক, অটোভ্যান, ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক ও অটোরিকশা চলাচল করে থাকে। রাত থেকে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েছেন চালক ও যাত্রীরা।
২০০৬ সালে ১৭০ দশমিক ৬৪২ মিটার সেতুটি নির্মাণ করে এলজিইডি। সেতুটি নির্মাণের পর থেকে কয়েকবার পূর্ব ও পশ্চিম তীরের সংযোগ সড়ক ধসে যায়। গত বছরও সেতুর পশ্চিম পাশ ধসে গিয়েছিল।
স্থানীয় বাসিন্দা ইয়াকুব আলী বলেন, “সেতুর পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের ভোটে অনেকেই সংসদ সদস্য ও উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তাদের প্রভাবে এই নদীতে অবৈধ ড্রেজিং করা হয়। ফলে প্রতিবছরই সড়ক ভেঙে ভোগান্তি পোহাতে হয়। আজও নৌকা দিয়ে মানুষ পারাপার হচ্ছে।”
অটোরিকশার চালক মোমিন মিয়া বলেন, “ভোরে যাত্রী নিয়ে এসে দেখি সড়ক ভেঙে গেছে। পরে যাত্রী নামিয়ে ভাঙনের দৃশ্য দেখেছি। দ্রুত বিকল্প ব্যবস্থা না নিলে আমরা গাড়ি চালাইতে পারব না।”
কাতুলী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সুমন দেওয়ান বলেন, নদীতে পানির চাপ বেড়ে পশ্চিম পাশের সংযোগ সড়ক ও কয়েকটি বাড়িতে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে সেতুটি ভেঙে চরাঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
টাঙ্গাইল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহীন মিঞা বলেন, “রাতে খবর পেয়ে ভোরে ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেছি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে সমন্বয় করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করছি।
“যেহেতু ঘটনাস্থলে আশেপাশে কোনো সেতু অথবা বিকল্প পারাপারের ব্যবস্থা নেই। তাই বিষয়টি সকলের সমন্বয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করছি।”
এলজিইডি টাঙ্গাইল জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, “পানি উন্নয়ন বোর্ড ও সদর উপজেলা পরিষদের সঙ্গে কথা বলে যৌথ উদ্যোগে দ্রুত অ্যাপ্রোচ সড়ক মেরামতের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
