গত বছর প্রথমবার ডাক পেলেও নাগরিকত্ব নিয়ে জটিলতায় জিম্বাবুয়ে জাতীয় দলে খেলা হয়নি তার।
সংগৃহিত
নাগরিকত্ব প্রাপ্তি নিয়ে জটিলতায় এক বছরের বেশি সময় আগে ডাক পেয়েও জিম্বাবুয়ে জাতীয় দলে খেলা হয়নি আন্তুম নাকভির। সেই সমস্যা মিটে গেছে। ফলে, আফ্রিকার দেশটির জার্সিতে এখন অভিষেকের খুব কাছে অসাধারণ এক রেকর্ডের মালিক এই ব্যাটসম্যান।
ঘরের মাঠে আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টের জন্য ১৬ জনের দল ঘোষণা করেছে জিম্বাবুয়ে। প্রথমবারের মতো এই সংস্করণের দলে আছেন নাকভি।
নাকভির জন্ম বেলজিয়ামে, ক্রিকেটে পথচলা শুরু ও বেড়ে ওঠা আবার অস্ট্রেলিয়ায়। তিনি একজন কোয়ালিফাইড বাণিজ্যিক পাইলটও। তবে অনেকদিন ধরেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলার স্বপ্ন তার।
সেই লক্ষ্যে ২০২৩ সালে জিম্বাবুয়ের ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলা শুরু করেন নাকভি। ওই বছর মিড ওয়েস্ট রাইনোজ দলের হয়ে প্রথম শ্রেণি, লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেট ও টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক হয় তার। লাল বলের ক্রিকেটে প্রথম দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি করে ফেলে দেন হইচই।
২০২৪ সালের জানুয়ারিতে নাকভি গড়েন নতুন এক ইতিহাস। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তো বটেই, স্বীকৃত যে কোনো ধরনের ক্রিকেটেই জিম্বাবুয়ের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ট্রিপল সেঞ্চুরির কীর্তি গড়েন তিনি, খেলেন অপরাজিত ৩০০ রানের ইনিংস।
এরপরই গত বছরের জুলাইয়ে ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ দিয়ে প্রথমবারের মতো জিম্বাবুয়ে দলে ডাক পান নাকভি। তখন তার খেলা নির্ভর করছিল দেশটির নাগরিকত্ব পাওয়ার নিশ্চয়তার ওপর। কিন্তু শেষ পর্যন্ত খেলতে পারেননি তিনি।
তবে দমে যাননি ২৬ বছর বয়সী নাকভি। ঘরোয়া ক্রিকেটে পারফরম্যান্স করে গেছেন নিয়মিত। গত এপ্রিলে লিস্ট ‘এ’ ম্যাচে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে জিম্বাবুয়ে ‘এ’ দলের হয়ে খেলেছিলেন ১৫৮ রানের ইনিংস। গত সপ্তাহে এমসিসির বিপক্ষে জিম্বাবুয়ে ‘এ’ দলের জার্সিতে প্রথম শ্রেণির ম্যাচে করেন ৬৮ ও ১০৮ রান।
প্রায় ১৫ মাস পর আবার জাতীয় দলে ডাক পেলেন নাকভি। জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দেশটির প্রতিনিধিত্ব করতে আর বাধা নেই তার।
সব মিলিয়ে, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১৯ ম্যাচ খেলে ৬ সেঞ্চুরি ও ৭ ফিফটিতে ১ হাজার ৬২৬ রান করেছেন নাকভি। ব্যাটিং গড় ৬৭.৭৫। লিস্ট ‘এ’ ম্যাচ খেলেছেন ২২টি, ১ হাজার ২৮৬ রান করেছেন ৬ সেঞ্চুরি ও ৬১.২৩ ব্যাটিং গড়ে। আর ১২ টি-টোয়েন্টিতে দুই ফিফটি ও ৪০ ব্যাটিং গড়ে করেছেন ৩২০ রান।
গত জুলাই-অগাস্টে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলা টেস্ট সিরিজের দল থেকে বাদ পড়েছেন ট্রেভর গুয়ান্ডু, নিউম্যান নিয়ামহুরি, ক্লাইভ মাডান্ডে ও ভিনসেন্ট মাসেকিওয়া। ব্যক্তিগত কারণে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের শেষ ধাপ থেকে সরে দাঁড়ানো অভিজ্ঞ শন উইলিয়ামসকে টেস্টেও পাচ্ছে না জিম্বাবুয়ে।
নিউ জিল্যান্ড সিরিজে না খেলা বাঁহাতি পেসার রিচার্ড এনগারাভা, পেস বোলিং অলরাউন্ডার ব্র্যাড ইভান্স ফিরেছেন দলে। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে ক্যারিয়ারের একমাত্র টেস্টটি খেলেছিলেন ইভান্স, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে।
ক্রেইগ আরভাইনের নেতৃত্বাধীন দলে আছেন অভিজ্ঞ ব্রেন্ডন টেইলর, সিকান্দার রাজা ও ব্লেসিং মুজারাবানি।
হারারেতে আগামী সোমবার শুরু হবে টেস্ট ম্যাচটি।
জিম্বাবুয়ে টেস্ট দল: ক্রেইগ আরভাইন (অধিনায়ক), ব্রায়ান বেনেট, টানাকা চিভাঙ্গা, বেন কারান, ব্র্যাড ইভান্স, রয় কাইয়া, টানুনুরওয়া মাকোনি, ওয়েলিংটন মাসাকাদজা, টিনোটেন্ডা মাপোসা, ব্লেসিং মুজারাবানি, আন্তুম নাকভি, রিচার্ড এনগারাভা, সিকান্দার রাজা, টাফাডজোয়া সিগা, ব্রেন্ডন টেইলর, নিক ওয়েলচ।
