বিশ্বের দুই শীর্ষ অর্থনীতির মধ্যে বাণিজ্য আলোচনায় অচলাবস্থার জন্যও বেইজিংকে দোষারোপ করেছেন তিনি।
সংগৃহিত
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, চীনা পণ্যে তার প্রস্তাবিত ১০০% শুল্ক আদতে টেকসই হবে না।
তিনি বিশ্বের দুই শীর্ষ অর্থনীতির মধ্যে বাণিজ্য আলোচনায় অচলাবস্থার জন্য বেইজিংকে দোষারোপও করেছেন। চীনা কর্তৃপক্ষ দুর্লভ খনিজ রপ্তানিতে কড়াকড়ি আরোপ করলে এই অচলাবস্থা শুরু হয়।
চীনা পণ্যে এ ধরনের উচ্চ শুল্ক টেকসই হবে কিনা, এবং এর ফলে মার্কিন অর্থনীতিতে কী প্রভাব পড়বে এমন প্রশ্নের জবাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, “এটা টেকসই নয়, কিন্তু সংখ্যাটা সেটাই।”
“ওরাই (চীন) আমাকে এটা করতে বাধ্য করেছে,” শুক্রবার ফক্স বিজনেস নেটওয়ার্কে প্রচারিত এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পকে এমনটাই বলতে শোনা যায় বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
চীনা পণ্যে অতিরিক্ত ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের এই পরিকল্পনা ট্রাম্প সপ্তাহখানেক আগে সামনে আনেন।
পাশাপাশি ১ নভেম্বর থেকে ‘সব ধরনের সংবেদনশীল সফটওয়ার’ রপ্তানিতে নতুন বিধিনিষেধ আরোপ করার কথাও জানান।
ওয়াশিংটন-বেইজিংয়ের মধ্যে আগের সমঝোতা অনুযায়ী, একে অপরের ওপর দেওয়া শুল্কে ছাড়ের মেয়াদ আগামী ১০ নভেম্বরই শেষ হতে যাচ্ছে।
দুর্লভ ভৌত খনিজ রপ্তানিতে চীনের বিধিনিষেধের পাল্টায় ট্রাম্প নতুন এই শুল্ক আরোপ ও সফটওয়ার রপ্তানিতে কড়াকড়ির পরিকল্পনা করছেন বলে জানিয়েছে ওয়াশিংটন।
দুর্লভ খনিজের বাজারে চীনের একচেটিয়া আধিপত্য আছে। প্রযুক্তি ও প্রতিরক্ষা খাতে এই খনিজের বিকল্প নেই।
তবে এরপরও চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প। চলতি মাসের শেষদিকে দক্ষিণ কোরিয়ায় এই দুই নেতার বৈঠক হওয়ার কথা।
“চীনের সঙ্গে আমাদের ভালো কিছু হতে যাচ্ছে বলেই আমার ধারণা, কিন্তু আমাদের মধ্যে একটা ন্যায্য চুক্তি হতে হবে, ন্যায্য হতে হবে,” ফক্স বিজনেস নেটওয়ার্কের ‘মর্নিংস উইথ মারিয়া’ অনুষ্ঠানে এমনটাই বলেন ট্রাম্প। অনুষ্ঠানটি বৃহস্পতিবার রেকর্ড করা হয়।
ইউক্রেইন যুদ্ধ বন্ধে রাশিয়ার ওপর চাপ সৃষ্টির উদ্যোগ নিয়ে ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে লাঞ্চের প্রস্তুতি নেওয়া মার্কিন এ প্রেসিডেন্ট চীনা নেতা শি জিনপিংয়ের বেশ প্রশংসাও করেছেন।
“চীন কথা বলতে চায়, আমরাও চীনের সঙ্গে কথা বলতে পছন্দ করি,” বলেছেন তিনি।
চীন বিষয়ে তার এই ‘নরম সুর’ এবং শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দেখা করতে আগ্রহ শুক্রবার দিনের শেষভাগে মার্কিন শেয়ার বাজারে ইতিবাচক ধারা ফিরিয়েছে। চীনের সঙ্গে ফের শুল্কযুদ্ধ বাঁধতে যাচ্ছে এই আশঙ্কায় গত কয়েকদিনে দেশটির অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ শেয়ারের দাম পড়ে গিয়েছিল।
শুক্রবার মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট ও চীনা ভাইস প্রিমিয়ার হে লাইফেংয়ের মধ্যে ফোনে কথাও হয়েছে।
দুইজনের মধ্যে বাণিজ্য বিষয়ে ‘খোলামেলা ও বিস্তারিত আলোচনা’ হয়েছে জানিয়ে বেসেন্ট বলেছেন, লাইফেংয়ের সঙ্গে দিন কয়েকের মধ্যে সরাসরি সাক্ষাৎ হতে যাচ্ছে তার।
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার প্রধান এনগোজি ওকোঞ্জো ইওয়েলা চীন ও যুক্তরাষ্ট্রকে নিজেদের মধ্যকার বাণিজ্য উত্তেজনা দ্রুত প্রশমিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।
বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতির মধ্যে বিচ্ছেদ বৈশ্বিক অর্থনৈতিক উৎপাদন দীর্ঘমেয়াদে ৭% পর্যন্ত কমিয়ে দিতে পারে বলে তিনি সতর্কও করেছেন।
