“ধর্ষণের ভুয়া ঘটনায় পাহাড়ি ও বাঙালিদের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে ভারত অঞ্চলটিকে অস্থিতিশীল করা চেষ্টা করছে,” এক সমাবেশে বলেছিলেন তিনি।
হতে সংগৃহিত
খাগড়াছড়িতে মারমা স্কুল ছাত্রীকে ‘দলবেঁধে ধর্ষণের’ ঘটনায় দেওয়া বক্তব্যের জন্য ভুল স্বীকার করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ।
এ ঘটনায় বিব্রত হয়েছেন জানিয়ে সোমবার এক ফেইসবুক পোস্টে দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।
ওই পোস্টে মাসউদ বলেন, “গতকাল হাতিয়ার চানন্দী ইউনিয়নে এক সমাবেশে আমি ভুলবশত ও তাৎক্ষণিকভাবে ‘ভুয়া ধর্ষণ’ শব্দটি ব্যবহার করে ফেলি; যা কোনোভাবেই আমার ইন্টেনশন ছিল না।
“ধর্ষণের মতো গর্হিত অপরাধকে কোনোভাবেই অস্বীকার করা যায় না। ধর্ষকের কঠোর থেকে কঠোরতর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। এই অনাকাঙ্ক্ষিত শব্দটি ব্যবহার করায় আমি বিব্রত ও দুঃখিত। আশা করি আমার শুভাকাঙ্ক্ষী, সমর্থক ও সমালোচকরা এটাকে আমার মুহূর্তের ভুল হিসেবেই বিবেচনা করবেন।”
তিনি বলেন, “পাহাড় ও সমতলের বাংলাদেশের সকল নাগরিকের প্রতি আহ্বান থাকবে, পরাজিত ও ফ্যাসিবাদী শক্তির সব ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে ঐকবদ্ধ থাকুন। আলোচনার মাধ্যমে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করুন। উভয় পক্ষের কথা গুরুত্ব দিয়ে শোনার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনি ও সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই।”
এর আগে রোববার সন্ধ্যায় নোয়াখালীর হাতিয়ায় চানন্দী ইউনিয়নের সাইফুল মার্কেট এলাকায় ‘ঐক্য ও সংহতির সমাবেশে’ হান্নান মাসউদ দাবি করেন, “শেষ ট্রাম্পকার্ড খেলছে ভারত, একটি ভুয়া ধর্ষণের ঘটনার মাধ্যমে পাহাড়ি ও বাঙালিদের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে অঞ্চলটিকে অস্থিতিশীল করে তোলার চেষ্টা চলছে।
“বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চল নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। ভারত এই অঞ্চল কেড়ে নিতে চায়। তবে আমরা স্পষ্ট করে দিতে চাই—বাংলাদেশের এক ইঞ্চি মাটিও কাউকে ছেড়ে দেওয়া হবে না। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানকে মোকাবিলা করেছি, ২০২৫ সালে ভারতের মোকাবিলাও করব।”
এদিকে ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ‘নীরবতা’ এবং দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদের বক্তব্যের প্রতিবাদে পদত্যাগ করেছেন দলটির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) অলিক মৃ।
ধর্ষণের ওই ঘটনার জেরে পাহাড়ে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। শনিবার থেকে ‘জুম্ম-ছাত্র জনতা’ ব্যানারে তিন পার্বত্য জেলায় চলছে অবরোধ।
পরিস্থিতি অবনতি হলে শনিবার দুপুরে খাগড়াছড়ির গুইমারায় ১৪৪ ধারা জারি করে উপজেলা প্রশাসন। কিন্তু এর মধ্যেই সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে এবং একটি বাজারে আগুন দেওয়া হয়। পরে অবরোধকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষে তিনজন নিহতের খবর আসে।
আরও পড়ুন