গ্রিসের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ১৬১ জন আন্দোলনকারী একটি ফ্লাইটে এথেন্সে পৌঁছেছেন, তাদের মধ্যে থুনবার্গও আছেন।

হতে সংগৃহিত
সুইডিশ জলবায়ু আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ ইসরায়েলের আটক অবস্থা থেকে ছাড়া পেয়ে গ্রিসে যাওয়ার পর ফিলিস্তিনপন্থি উল্লসিত জনতা তাকে বরণ করে নিয়েছে।
ইসরায়েলে জানিয়েছে, সোমবার তারা থুনবার্গসহ ৭১ জন আন্দোলনকারীকে বহিষ্কার করেছে।
থুনবার্গ ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের চারশোরও বেশি অধিকার আন্দোলনকারী ৪০টিরও বেশি নৌযান নিয়ে ফিলিস্তিনের যুদ্ধবিধ্বস্ত, অবরুদ্ধ ও দুর্ভিক্ষ কবলিত ছিটমহল গাজায় ত্রাণ পৌঁছানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাদের নৌযানগুলো ভূমধ্যসাগরের আন্তর্জাতিক জলসীমায় থাকা অবস্থায় ইসরায়েলি বাহিনী সেগুলোর গতিরোধ করে ও আন্দোলনকারীদের গ্রেপ্তার করে।
থুনবার্গরা গাজার জলসীমায় বসানো ইসরায়েলি নৌ-অবরোধ ভাঙার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ইসরায়েলের সশস্ত্র বাহিনী তাদের প্রচেষ্টা রুখে দিয়ে প্রায় ৪৭৯ জন আন্দোলনকারীকে গ্রেপ্তার করে। তারপর থেকে এ পর্যন্ত ৩৪১ জন আন্দোলনকারীকে তুরস্ক, গ্রিসসহ নিকটবর্তী দেশগুলোতে পাঠিয়ে দিয়েছে তারা।
গ্রিসের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সোমবার ১৬১ জন আন্দোলনকারী একটি ফ্লাইটে এথেন্সে এসে পৌঁছান। তাদের মধ্যে থুনবার্গও (২২) আছেন। বাকিদের মধ্যে গ্রিসের ২৭ ও আরও প্রায় ২০ দেশের নাগরিকরা রয়েছেন।

এথেন্স বিমানবন্দরে গ্রেটা থুনবার্গ ও ইসরায়েল থেকে ছাড়া পাওয়া অন্যান্য আন্দোলনকারীরা। ছবি: রয়টার্স
এথেন্স বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানানো জনতার উদ্দেশে থুনবার্গ বলেন, “আমি খুব স্পষ্ট করে বলছি, সেখানে একটি গণহত্যা চলমান আছে।”
গাজায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর চলমান হামলা, হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞের উল্লেখ করে এ মন্তব্য করেন তিনি।
“আমাদের বিশ্ব ব্যবস্থা ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করছে। তারা এমনকী জঘন্য যুদ্ধাপরাধ ঘটতে থাকালেও তা ঠেকাতে পারছে না। আমাদের সরকারগুলো যখন তাদের আইনি বাধ্যবাধকতা পালনে ব্যর্থ হয়েছে তখন আমরা পদক্ষেপ নিয়ে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার মাধ্যমে তা করার চেষ্টা করেছি,” বলেন থুনবার্গ।
এর আগে ফ্লোটিলার সুইস ও স্প্যানিশ আন্দোলনকারীরা জানান, ইসরায়েলি বাহিনী তাদের আটক করার পর তাদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করেছে।
এথেন্সে পৌঁছানোর পর থুনবার্গ জানান, তাদের সঙ্গে যে দুব্র্যবহার করা হয়েছে ও কারাগারে নির্যাতন করা হয়েছে তা নিয়ে ‘অনেক দীর্ঘ সময় ধরে’ কথা বলতে পারবেন তিনি, কিন্তু ‘গল্প এটা না’।
“সেখানে যা হচ্ছে তা হল ইসরায়েল একটি পুরো জনগোষ্ঠীকে, একটি পুরো জাতিকে আমাদের চোখের সামনে মুছে ফেলার চেষ্টা করছে। তারা গণহত্যার অভিপ্রায় নিয়ে তাদের গণহত্যা ও ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ অব্যাহত রেখে আরও খারাপ ও তীব্র করে তুলছে। গাজায় মানুষ যাখন অনাহারে আছে তখন সেখানে মানবিক ত্রাণ পাঠানোর প্রচেষ্টায় বাধা দিয়ে তারা আবারও আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে।”
সুমুদ ফ্লোটিলায় অংশ নেওয়া স্পেনের বার্সেলোনা নগরীর সাবেক মেয়র আডা কোলাউ বলেছেন, “ওরা দুব্র্যবহার করেছে, কিন্তু ফিলিস্তিনের জনগণ প্রতিদিন যে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন তার তুলনায় এগুলো কিছুই না।”