ঢাকা ওয়াসার এটিএম বুথ থেকে সহজেই সংগ্রহ করা যাচ্ছে বিশুদ্ধ পানি।
সংগৃহিত
এটিএম কার্ড দিয়ে টাকা তোলা নতুন কোনো বিষয় নয়। তবে এবার এটিএম কার্ড দিয়ে পানিও পাওয়া যাচ্ছে।
ঢাকার ব্যস্ত জীবনে বিশুদ্ধ পানির নিশ্চয়তা করতে ঢাকা ওয়াসার এটিএম বুথে স্মার্ট কার্ড ব্যবহার করে সহজেই সুপেয় পানি সংগ্রহ করা যাচ্ছে।
আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘ড্রিংকওয়েল’য়ের সহযোগিতায় ওয়াসার এই উদ্যোগে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে থাকা পানি সংগ্রহের বুথগুলো এখন বেশ জনপ্রিয়।
যেভাবে কার্ড মিলবে
শ্যামলী রিং রোডের এটিএম বুথের অপারেটর উর্মিলা আকতার বলেন, “মাত্র ৫০ টাকার বিনিময়ে একটি আবেদন ফর্ম পূরণ করে, জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি আর একটি পাসপোর্ট সাইজের ছবি সংশ্লিষ্ট বুথে জমা দিলেই রেজিস্ট্রেশন করা যায়। এরপর গ্রাহকের জন্য একটি স্মার্ট কার্ড দেওয়া হবে।”
তিনি আরও বলেন, “কার্ডটি মেশিনে ধরলেই পানি সংগ্রহ করা যায়। গ্রাহককে তাদের নিজস্ব পাত্রে পানি নিতে হবে। কার্ড না সরানো পর্যন্ত পানি আসতে থাকবে।”
কার্ডের মূল্য ৫০ টাকা। আর এটিতে ১০ থেকে ৯৯৯ টাকা পর্যন্ত রিচার্জ করা যায়। বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমেও ব্যালেন্স রিচার্জের সুবিধা রয়েছে।
কতগুলো বুথ, কতজন গ্রাহক
ঢাকা ওয়াসা’র ওয়েবসাইটের তথ্যানুসারে- তাদের ৩০১টি চালু এটিএম বুথ রয়েছে, যেখান থেকে প্রায় ৪ লাখ ৩২ হাজার গ্রাহক নিয়মিত পানি সংগ্রহ করছেন।
এই বুথগুলি শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকায় সহজেই পানি সংগ্রহের সুযোগ পাচ্ছেন নগরবাসী।
এটিএম কার্ড ব্যবহারের শর্তাবলী
ওয়াসার এটিএম বুথ থেকে পানি সংগ্রহের জন্য কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে:
১. সময়সীমা: প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় (সকাল সাড়ে ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত) বুথ থেকে পানি সংগ্রহ করা যায়।
২. পানির পরিমাণ: একবারে সর্বোচ্চ ৫০ লিটার পানি সংগ্রহ করা যাবে।
৩. পানির মূল্য: বর্তমানে প্রতি লিটার পানির দাম ৮০ পয়সা, যা সময়ের সাথে পরিবর্তিত হতে পারে।
৪. সুশৃঙ্খলা: বুথে গ্রাহক বেশি থাকলে সারিবদ্ধভাবে পানি নিতে হবে।
৫. অনলাইন রেকর্ড: স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে সংগ্রহকৃত পানির পরিমাণ অনলাইনে রেকর্ড থাকবে।
৬. কার্ড হারানো বা নষ্ট হলে: নতুন কার্ডের জন্য পুনরায় ৫০ টাকা ফি দিয়ে কার্ড নিতে হবে।
৭. কার্ড সংগ্রহ: সংশ্লিষ্ট বুথের অপারেটরের কাছ থেকে কার্ড সংগ্রহ করা যাবে।
৮. প্রি-পেইড কার্ড: পানি সংগ্রহের আগে কার্ডে পর্যাপ্ত ব্যালেন্স রিচার্জ করতে হবে।
গ্রাহকের অভিজ্ঞতা
শ্যামলী বাবর রোডের বাসিন্দা দিলরুবা আফরোজা বলেন, “এটিএম বুথের পানি খুবই বিশুদ্ধ। বাসার লাইনের পানিতে দুর্গন্ধ থাকে, ময়লাও থাকে। তাই আমি প্রতিদিন এখান থেকে পানি কিনে বোতলে ভরে রিকশায় বাসায় নিয়ে যাই। আমাদের পরিবারের সবাই এই পানি পান করে।”
পানির অপচয় রোধ করুন
ওয়াসার এই উদ্যোগ নগরবাসীকে বিশুদ্ধ পানির নিশ্চয়তা দিচ্ছে। তবে পানির অপচয় এড়াতে সবাইকে সচেতনও থাকতে হবে।
