“যদি ফেইলিউর হয়ে থাকি, তাহলে আমার একার ফেইলিউর না; আপনাদেরও ফেইলিউর আছে,” বলেন তিনি।
অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছরের মূল্যায়নের আলোচনায় গিয়ে শ্রম উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন মনে করালেন কোন পরিস্থিতিতে এ সরকার দায়িত্ব নিয়েছিল।
তার কথায়, “আমরা পলিটিকাল ইকোনমির কথা তো অনেক বলছি; এটাও পলিটিকাল ইকোনমির তথ্য। এই একটা গার্মেন্ট কোম্পানি টোটাল ৪৮ হাজার ২৪৮ কোটি টাকা পার্টিকুলারলি ১৬টা ব্যাংক এবং সাতটি ফাইন্যান্সিয়াল কোম্পানি থেকে নিয়ে গেছে। কোথায় টাকা কেউ জানে না। ট্রাই করছি মানি ব্যাক করতে।
“(এর মধ্যে) একটা ব্যাংকের আমি নাম নিচ্ছি। একটা ব্যাংক- জনতা ব্যাংক। এখান থেকে প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকা নিয়ে গেছে।”
রোববার বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) আয়োজিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ৩৬৫ দিন শীর্ষক এক আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
জনতা ব্যাংক সেই গার্মেন্টে কীভাবে অর্থায়ন করেছে, তার সদুত্তর মেলেনি বলে জানান উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন। তিনি মনে করেন, এমন পরিস্থিতির জন্য ব্যাংক খাতের নিয়ন্ত্রকদেরই দায় বেশি।
“কোথাও শুনেছেন যে বাংলাদেশ ব্যাংকের মত স্টেট ব্যাংকের গভর্নর পালিয়ে যায়? বাংলাদেশের তিনজনকে পাওয়া যাচ্ছে না; ইনক্লুডিং গরিবের ব্যাংকার মানে গরিবের গভর্নর ছিলেন, উনিও পলাতক,” বলেন সাখাওয়াত।
শ্রম উপদেষ্টা বলেন, এভাবে দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাঠামো বিগত আমলে ভেঙে পড়েছিল। আর যখন তিনি দায়িত্ব নেন, তখন দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ছিল নাজুক। থানা পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় পুলিশ কাজে ফিরতে অনাগ্রহী ছিল।
তিনি বলেন, “এ অবস্থার মধ্যেও উই ট্রাই আওয়ার লেভেল বেস্ট। গালি খাচ্ছি আর খাচ্ছি। ইউটিউব ওপেন, যা খুশি তাই বলে যাচ্ছে। আর এগুলো হজম করতে হচ্ছে। অ্যান্ড আই ডোন্ট হ্যাভ মাই ওয়ার্কার যে- ‘যা ওরে পিটায়া দিয়ে আয়’। তাই চুপচাপ হজম করতে হচ্ছে। শুনতে হচ্ছে।
“অনেকেই বলে, ‘স্যার, ওটা আপনাকে বলছে’। আমি বলি, কিছু করার নাই। লেট দেম ডু ইট। যাই হোক আমরা চেষ্টা করছি ভাই। যদি ফেইলিউর হয়ে থাকি, তাহলে আমার একার ফেইলিউর না; আপনাদেরও ফেইলিউর আছে।”
অন্তর্বর্তী সরকারের সফলতার কথা বলতে গিয়ে সাখাওয়াত বলেন, এখন সবাই মন খুলে কথা বলতে পারছে; কাউকে গুম, খুন করা হচ্ছে না।
শ্রমিকের টাকায় অনেকে বিদেশে থাকলেও কর্মীদের বেতন না দেওয়ার প্রবণতা থাকার তথ্য তুলে ধরেন শ্রম উপদেষ্টা।
সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “বেশ কয়েকজন- যারা ব্যর্থ মালিক, তাদের সম্পত্তি এখন আমার মন্ত্রণালয়ের কাছে আছে। তাদের বাড়ি, তাদের দলিল নিয়ে আসা হয়েছে। এখন রেডি টু সেল। দুই-চার দিনের মধ্যে একটু বিক্রি হবে। কারণ ওয়ার্কারদের সেন্ট্রাল ফান্ড থেকে লোন দেওয়া হয়েছে। এই করে করে চেষ্টা হচ্ছে- তাদের অর্থ ফিরিয়ে দিতে।
“কারণ আমার যে স্টাডি, এটা হচ্ছে যে- এইসব লোক টাকা-পয়সা নিয়ে গেছে। কোথাও টাকা-পয়সা নাই। টাকা-পয়সা নিয়ে বিদেশে থাকছে; অথচ শ্রমিকের বেতন দিতে পারেন না। এটা এই সময়ের না, গত দুই বছর-তিন বছর আগের।
“আমরা আসার আগে থেকে শ্রমিকরা বেতন পাইতেন না, কিন্তু শ্রমিকরা কোনো কথাও বলতে পারে নাই। কথা বললে গুম, না হয় জেল, না হয় গুলি। ৪২ জন শ্রমিক নেতা জেলের মধ্যে ছিল (অন্তর্বর্তী সরকার আসার সময়)। এখন মাত্র একজন আছে। বাকিদের বাইর করা হয়েছে।”