শিক্ষা ও সামাজিক-অর্থনৈতিক উন্নয়নে তার ভূমিকা এবং ‘মানবকল্যাণে আজীবন প্রতিশ্রুতির’ স্বীকৃতিস্বরূপ এ সম্মাননা প্রদান করা হয়।
হতে সংগৃহিত
শিক্ষা ও সামাজিক-অর্থনৈতিক ‘উন্নয়নে ভূমিকা’ এবং ‘মানবকল্যাণে আজীবন প্রতিশ্রুতির’ স্বীকৃতি হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে থেয়ারওয়ার্ল্ডের ‘আনলক বিগ চেঞ্জ অ্যাওয়ার্ড’ দেওয়া হয়েছে।
নিউ ইউর্কে থেয়ারওয়ার্ল্ডের বার্ষিক উচ্চপর্যায়ের গ্লোবাল এডুকেশন ডিনারে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে দেওয়া হয়েছে এই বিশেষ সম্মাননা।
বাসস বলছে, সোমবার নিউ ইয়র্কের একটি হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ সম্মাননা প্রদান করা হয়।
জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে এই সম্মাননা গ্রহণ করেছেন মুহাম্মদ ইউনূস।
শিশুদের জন্য নিবেদিত আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা থেয়ারওয়ার্ল্ড বিশ্বব্যাপী শিক্ষা সংকট নিরসন ও নতুন প্রজন্মের সম্ভাবনা বিকাশে কাজ করছে।
অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে সঞ্চালনা করেন জাতিসংঘের বৈশ্বিক শিক্ষা বিষয়ক বিশেষ দূত ও যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউন এবং থেয়ারওয়ার্ল্ডের চেয়ার ও গ্লোবাল বিজনেস কোয়ালিশন ফর এডুকেশনের নির্বাহী চেয়ার সারা ব্রাউন।
অনুষ্ঠানে শিক্ষার রূপান্তরমূলক শক্তিকে বিশেষভাবে তুলে ধরা হয়।
ইউনূসের পাশাপাশি জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপো গ্রান্ডিকেও সম্মাননা দেওয়া হয়। তবে দারিদ্র্য দূরীকরণে মাইক্রোক্রেডিট কার্যক্রম এবং শিক্ষাকে তার কেন্দ্রীয় অংশে অন্তর্ভুক্ত করার আজীবন সংগ্রামের কারণে ইউনূসের স্বীকৃতি বেশি গুরুত্ব পায়।
গর্ডন ব্রাউন পুরস্কার প্রদানকালে বলেন, “গত পঞ্চাশ বছরে বেসরকারি খাতে কোনো প্রকল্প মানুষের দারিদ্র্যমুক্তিতে গ্রামীণ ব্যাংকের উদ্যোগের মতো কার্যকর ভূমিকা রাখেনি।”
তিনি মুহাম্মদ ইউনূসকে বিশ্বব্যাপী ‘এক পথপ্রদর্শক’ হিসেবে অভিহিত করেন।
পুরস্কার গ্রহণ করে ইউনূস বলেন, “খাদ্য, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষার মতো ঋণও একটি মৌলিক মানবাধিকার। যদি আর্থিক ব্যবস্থার দরজা সবার জন্য উন্মুক্ত হয়, তবে পৃথিবীতে কেউ আর গরিব থাকবে না। আমি মাইক্রোক্রেডিটের প্যাকেজে শিক্ষাকে যুক্ত এবং নারীদের সহায়তা করেছি, যাতে তারা তাদের সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে পারে।”
মুহাম্মদ ইউনূস আর্থিক ক্ষমতায়ন ও শিক্ষার আন্তঃসম্পর্কের ওপর জোর দিয়ে বিভিন্ন উদাহরণ তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, “মাইক্রোক্রেডিটের সুযোগ নিয়ে বহু নারী তাদের পরিবারকে দারিদ্র্য থেকে মুক্ত করেছেন এবং সন্তানদের শিক্ষার সুযোগ করে দিয়েছেন।”
তিনি শিশুদের সৃজনশীলতা ও উদ্যোক্তা মানসিকতা গড়ে তোলার শিক্ষার তাগিদ দেন।
তিনি বলেন, “একজন শিশুর শেখা উচিত কিভাবে উদ্যোক্তা হওয়া যায়।”
তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবসাকে মানবকল্যাণের শক্তি হিসেবে ব্যবহার করার শিক্ষা দিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় হওয়া উচিত এমন এক স্থান, যেখানে মানব সমস্যার সমাধান শুধু উৎসাহিতই নয়, প্রত্যাশিতও হবে।”
তার কথায়, ‘মানবসমাজের সব সমস্যারই ব্যবসায়িক সমাধান সম্ভব।’