অভিষেক-ঐশ্বরিয়ার মামলায় যুক্ত করা ভিডিগুলোর লিংক শুক্রবার পর্যন্ত ইন্টারনেটে ছিল।
হতে সংগৃহিত
বলিউডের তারকা দম্পতি ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন এবং অভিষেক বচ্চনকে নিয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) তৈরি কয়েকটি ভিডিও গুগল এবং ইউটিউব থেকে মুছে ফেলা হয়েছে।
রয়টার্স বলছে, এআই ব্যবহার করে তাদেরকে নিয়ে বানানো ভুয়া ও আপত্তিকর ভিডিও সরাতে গুগল ও ইউটিউবের বিরুদ্ধে দিল্লি হাই কোর্টে মামলা ঠুঁকেছিলেন ঐশ্বরিয়া ও অভিষেক। তাদের মামলার খরর প্রকাশের পর এইআই দিয়ে তৈরি ওইসব ভিডিও সরানো হয়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
এই তারকা দম্পতির দাবি, এসব ভিডিও ভুয়া, অশালীন এবং তাদের সামাজিক মর্যাদা ও ব্যক্তিগত ইমেজের ওপর আঘাত হেনেছে।
তাদের করা মামলার নথিতে শত শত স্ক্রিনশট ও ভিডিও লিংক সংযুক্ত করা হয়েছে। প্রায় চার কোটি রুপি ক্ষতিপূরণ দাবিও করেছেন ঐশ্বরিয়া ও অভিষেক। পাশাপাশি ভবিষ্যতে এমন ভিডিও আর তৈরি বা শেয়ার না করা হয় সেই আবেদনও করেছিলেন মামলাতে।
ওই মামলার খবর রয়টার্সে প্রকাশের পর গুগল এবং ইউটিউব থেকে এইআই তৈরি কয়েকশ ভিডিও মুছে ফেলা হয়।
গুগল বলছে সরিয়ে ফেলা ভিডিগুলোর সঙ্গে অভিনয়শিল্পী দম্পতির অভিযোগে আনা ভিডিওগুলোর মিল রয়েছে।
‘এআই জেনারেটেড বলিউড লাভ স্টোরিজ’ নামের একটি জনপ্রিয় ইউটিউব চ্যানেল সরিয়ে ফেলা হয়েছে। সেখানে ‘যৌনতাপূর্ণ’ ২৫৯টি ভিডিও ছিল, যা দেখা হয়েছিল ১ কোটি ৬৫ লাখ বার। শুক্রবার ওই চ্যানেলের লিংকে বলা হয়েছে, ‘এ ধরনের কোনো পেইজ নেই’।
এর আগেও গুগল ইউটিউব থেকে এআই তৈরি কয়েকশ ভিডিও সরিয়ে ফেলা হয়। গত মাসেও এক বিচারক অভিযোগ পাওয়া কয়েকটি ভিডিও লিংক সরানোর নির্দেশ দেন। কিন্তু এআই তৈরি বলিউড অভিনেতাদের অন্তরঙ্গ কয়েকশ ভিডিও ইন্টারনেটে পাওয়া যাচ্ছে বলে রয়টার্স গেল সপ্তাহেও জানিয়েছিল।
অভিষেক-ঐশ্বরিয়ার মামলায় যুক্ত করা ভিডিগুলোর লিংক শুক্রবার পর্যন্ত ইন্টারনেটে ছিল।
বিভ্রান্তিকর কনটেন্ট সরানো হয়েছে: ইউটিউব
রয়টার্সকে পাঠানো এক মেইলে ইউটিউব বলছে, সংবাদ সংস্থার প্রতিবেদনে যে চ্যানেলটি চিহ্নিত করা হয়েছিল, সেটি এর নির্মাতা মুছে ফেলেছেন। এবং কনটেন্টও পাওয়া যাচ্ছে না।
ওই চ্যানেলটি হল ‘এআই বলিউড ইশক’। এই চ্যানেলটি সম্পর্কে বিস্তারিত না জানিয়ে রয়টার্স বলছে, প্রযুক্তির সাহায্যে তৈরি করা ভুল তথ্য এবং এমন সব কিছু সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই চ্যানেলটি ইউটিউব ব্যবহারকারীদের বিভ্রান্ত করার জন্য তৈরি করা হয়েছে।
ভারতের প্রায় ৬০ কোটি মানুষ ইউটিউব ব্যবহার করে। দেশটি ইউটিউবের একটি বড় বাজার।
বর্তমানে মুছে ফেলা চ্যানেলের সবচেয়ে জনপ্রিয় ভিডিওটি দেখা হয়েছে ৪.১ মিলিয়ন বার। ওই ভিডিও পাত্রপাত্রী হলেন ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন এবং সালমান খান। এই দুই তারকার সুইমিং পুলের একটি এআই অ্যানিমেশন দেখানো হয়েছে সেখানে।
এ বিষয়ে বলিউডের প্রভাবশালী দুই পরিবার বচ্চন এবং খানদের কোনো প্রতিক্রিয়া রয়টার্স জানতে পারেনি।
এইআই নির্মিত আরেকটি জনপ্রিয় ভিভিও ছিল অভিষেকের। সেখানে অভিষেককে প্রথমে ছবি তোলার জন্য দাঁড়াতে দেখা যায়। তারপর তিনি সিনেমার আরেকজন নায়িকা চুম্বন করেন। আরেকটি ছবিতে ঐশ্বরিয়া এবং সালমান খান একসঙ্গে কিছু একটা খাচ্ছেন, যা দেখে রাগে ফেটে পড়ছেন অভিষেক।
ঐশ্বরিয়া ও অভিষেকের অভিযোগ
ঐশ্বরিয়া ও অভিষেক মামলায় অভিযোগ করেছেন, তাদের ছবি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে কফি মগ ও টি-শার্টের মত নানা ধরনের সামগ্রী।
একই সঙ্গে এআই দিয়ে তৈরি করা ঐশ্বরিয়া বিকৃত এবং কয়েকজনের সঙ্গে অন্তরঙ্গ ছবি ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেটে।
আদালতে জমা দেওয়া ১৫০০ পাতার অভিযোগপত্রে বিভিন্ন ওয়েবসাইট, ইউটিউবের লিংক দেওয়া হয়েছে। যেগুলোতে বচ্চন দম্পতির মুখ স্পষ্ট।