আসিয়ান সম্মেলনে ট্রাম্পের কার্যসূচীর প্রথমটি হল কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ডের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তা প্রত্যক্ষ করা।
সংগৃহিত
মালয়েশিয়ায় রোববার থেকে শুরু হওয়া আসিয়ান সম্মেলনের জন্য দেশটিতে গিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। সেখানে তিনি থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে বিস্তৃত যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন আর তারপর অন্য দেশগুলোর সঙ্গে তার দেশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য আলোচনা তদারকি করবেন।
অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথেইস্ট এশিয়ান ন্যাশনস (আসিয়ান) এর সম্মেলনে ট্রাম্পের কার্যসূচীর প্রথমটি হল কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ডের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তা প্রত্যক্ষ করা। জুলাইতে এ দুই দেশের মধ্যে পাঁচ দিনের প্রাণঘাতী সীমান্ত সংঘাত বন্ধে মধ্যস্থতা করে ট্রাম্প সাহায্য করেছিলেন।
তিন মাস আগে লড়াই থামাতে ওই দুই দেশের নেতাদের ফোন করেছিলেন ট্রাম্প। তখন তার আহ্বানে সাময়িক যুদ্ধবিরতি চুক্তির মাধ্যমে লড়াই বন্ধ হয়। লড়াই বন্ধ না করলে দেশ দুটির সঙ্গে ওয়াশিংটনের বাণিজ্য আলোচনা মুলতুবি রাখার হুমকি দিয়েছিলেন ট্রাম্প।
দুই দেশের দীর্ঘ সীমান্তজুড়ে পাঁচ দিন ধরে চলা ওই লড়াইয়ে রকেট ও ভারী কামানের গোলা বিনিময় হয়। এতে উভয়পক্ষে অন্তত ৪৮ জন নিহত ও প্রায় তিন লাখ মানুষ সাময়িকভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন। এটি ছিল কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ডের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে তীব্র সংঘাত। এরপর ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় সাময়িক যুদ্ধবিরতি চুক্তির মধ্যে দিয়ে সংঘাতের অবসান হয়।
ওই সাময়িক যুদ্ধবিরতি চুক্তির ভিত্তিতে এবার বিস্তৃত যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর করছে প্রতিবেশী দেশ দুটি।
শুক্রবার রাতে থাইল্যান্ডের রানি মাতা সিরিকিতের (৯৩) মৃত্যু হওয়ার পর কুয়ালালামপুরের এই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান প্রায় পরিত্যাগ করতে যাচ্ছিলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী অনুতিন চার্নভিরাকুল। কিন্তু পরে আসিয়ান সম্মেলনের উদ্বোধনীতে ও যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে কুয়ালালামপুর যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
রোববার স্থানীয় সময় সকালে ট্রাম্প কুয়ালালামপুরের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছলে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম তাকে স্বাগত জানান। এ সময় ট্রাম্প লাল গালিচার ওপর থেমে তাকে স্বাগত জানানো আনুষ্ঠানিক নৃত্যদলের সঙ্গে নাচে যোগ দেন আর এক হাতে যুক্তরাষ্ট্রের একটি পতাকা ও আরেক হাতে মালয়েশিয়ার একটি পতাকা তুলে নেন। তারপর তার লিমোজিনে চড়ে প্রধানমন্ত্রী আনোয়ারের সঙ্গে তাদের গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দেন।
মালয়েশিয়ায় এবারের সম্মেলনে জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দ্য সিলভা ও দক্ষিণ আফ্রিকার সিরিল রামাফোসাসহ আরও কিছু বিশ্বনেতার উপস্থিত হওয়ার কথা।
মালয়েশিয়া সফর শেষে ট্রাম্পের জাপান হয়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় অ্যাপেক সম্মেলনে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানে বৃহস্পতিবার শি’র সঙ্গে যে বৈঠক করতে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট, এটি হতে যাচ্ছে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর চীনের নেতার সঙ্গে তার প্রথম বৈঠক।