পুরনো ওয়াচ বিক্রি করতে চান বা সফটওয়্যারজনিত কোনো সমস্যা সমাধান করতে চান, ওয়াচটি আনপেয়ার করা খুব সহজ একটি প্রক্রিয়া।
সংগৃহিত
অ্যাপল ওয়াচ নতুন মডেলে আপগ্রেড করা, বিক্রি করা বা সফটওয়্যারজনিত কোনো সমস্যা সমাধান করার সময় ব্যবহারকারীদের সাধারণত সেটি আইফোন থেকে ডিসকানেক্ট করতে হয়। এই প্রক্রিয়াটিকে ‘আনপেয়ারিং’ বলে।
প্রযুক্তি সাইট এনগ্যাজেট লিখেছে, এটি ওয়াচের সব ডেটা মুছে দেয়, ফোনের সঙ্গে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে এবং অ্যাক্টিভেশন লক সরিয়ে দেয় যাতে পরবর্তী ব্যবহারকারী সেটি সহজে ব্যবহার করতে পারেন।
এই আনপেয়ারিং প্রক্রিয়াটি খুব সহজ, আইফোন কাছে থাকুক বা না থাকুক উভয় ক্ষেত্রেই এটি করা যায়। নিচে দেখে নিতে পারেন কীভাবে এটি কাজ করে এবং কেন এই প্রক্রিয়াটি দরকার হতে পারে।
আইফোন থেকে যেভাবে অ্যাপল ওয়াচ ডিসকানেক্ট করবেন
সবচেয়ে সহজ উপায় হলো আইফোন ব্যবহার করা। প্রথমে আইফোন এবং অ্যাপল ওয়াচ দুটিকে পাশাপাশি রাখুন। এরপর আইফোনে থাকা অ্যাপল ওয়াচ অ্যাপ খুলুন। সেখানে মাই ওয়াচ ট্যাবে যান, তারপর ওপরের দিকে থাকা ‘অল ওয়াচেস’ অপশনটি সিলেক্ট করুন। এখন যে ওয়াচটি ডিসকানেক্ট করতে চান তার পাশে থাকা ‘ইনফো’ বাটনে ট্যাপ করুন।
এরপর আনপেয়ার অ্যাপল ওয়াচ সিলেক্ট করুন, তারপর আনপেয়ার নির্বাচন করুন। যদি ওয়াচ সেলুলার মডেলের হয় তাহলে চাইলে মোবাইল প্ল্যানটি রাখতে পারেন অথবা মুছেও ফেলতে পারেন। যদি ওয়াচটি বিক্রি বা অন্যকে দিতে চান তাহলে প্ল্যানটি রিমুভ করা ভালো কিন্তু আবার ব্যবহার করার পরিকল্পনা থাকলে এটি রেখে দিন।
এরপর অ্যাপল অ্যাকাউন্ট পাসওয়ার্ড দিয়ে ‘অ্যাক্টিভেশন লক’ বন্ধ করুন, তারপর আনপেয়ার নির্বাচন করুন। আনপেয়ারিং শুরু হওয়ার আগে আইফোন স্বয়ংক্রিয়ভাবে ওয়াচের একটি ব্যাকআপ তৈরি করবে। এই ব্যাকআপ পরে নতুন ওয়াচ সেটআপ করার সময় ব্যবহার করা যাবে। ফলে আগের ডেটা ও সেটিং অপরিবর্তিত থাকবে।
আইফোন ছাড়াই যেভাবে অ্যাপল ওয়াচ ডিসকানেক্ট করবেন
যদি আইফোন কাছে না থাকে তাহলেও সরাসরি ওয়াচ থেকেই সেটি রিসেট করতে পারবেন। তবে এই পদ্ধতিতে ব্যাকআপ তৈরি হবে না এবং ‘অ্যাক্টিভেশন লক’ সক্রিয়ই থাকবে। ডেটা সংরক্ষণ করতে চাইলে এ পদ্ধতিটি ব্যবহার না করাই ভালো।
রিসেট করতে হলে অ্যাপল ওয়াচের ‘সেটিংস’ খুলুন, এরপর ‘জেনারেল’-এ যান এবং নিচে স্ক্রল করে ‘রিসেট’ নির্বাচন করুন। তারপর ‘ইরেজ অল কনটেন্ট অ্যান্ড সেটিংস’ নির্বাচন করুন। প্রয়োজনে পাসকোড দিন।
সেলুলার মডেলের ক্ষেত্রে চাইলে মোবাইল প্ল্যান রাখবেন কি না তা নির্ধারণ করুন। এরপর ওয়াচটি নিজেই সবকিছু মুছে ফেলে রিস্টার্ট হবে এবং একদম নতুন অবস্থায় ফিরে আসবে।
অ্যাপল ওয়াচ কেন ডিসকানেক্ট করা দরকার
অ্যাপল ওয়াচ আনপেয়ার করার কয়েকটি প্রধান কারণ রয়েছে। প্রথমত, যদি নতুন মডেলে আপগ্রেড করতে চান এবং পুরনো ওয়াচটি বিক্রি বা অন্যকে দিতে চান তাহলে এটি করা আবশ্যক। দ্বিতীয়ত, সফটওয়্যার বা সিংকিং সমস্যার কারণে কখনও কখনও ওয়াচ ও আইফোনের সংযোগে সমস্যা দেখা দিতে পারে। সেক্ষেত্রে রিসেটই সবচেয়ে কার্যকর সমাধান।
আনপেয়ার করলে সব ডেটা নিরাপদে সংরক্ষিত থাকবে, ব্যাকআপ তৈরি হবে এবং অ্যাক্টিভেশন লক নিষ্ক্রিয় হবে। এটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ কারণ যদি এই ধাপটি বাদ দেন তাহলে পরবর্তী মালিক ওয়াচটি ব্যবহার করতে পারবেন না।
অ্যাপল ওয়াচ ডিসকানেক্ট করলে ডেটার কী হয়?
আইফোন দিয়ে আনপেয়ার করলে ওয়াচ স্বয়ংক্রিয়ভাবে একটি ব্যাকআপ তৈরি করে। সেখানে অ্যাপ ডেটা, সেটিংস এবং স্বাস্থ্য ও ফিটনেস সংক্রান্ত বেশিরভাগ তথ্য সংরক্ষিত থাকে। এই ব্যাকআপটি আইফোনে থাকে এবং যদি আইক্লাউড ব্যাকআপ চালু থাকে তবে এটি আইক্লাউডেও সংরক্ষিত হবে। ফলে নতুন ওয়াচে সহজেই আগের সব তথ্য পুনরুদ্ধার করা সম্ভব।
তবে যদি আইফোন ছাড়া সরাসরি ওয়াচ থেকে রিসেট করেন তাহলে কোনো ব্যাকআপ তৈরি হয় না। তখন সব ডেটা মুছে যাবে কিন্তু অ্যাক্টিভেশন লক সক্রিয়ই থাকবে। অ্যাক্টিভেশন লক মূলত অ্যাপল অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যুক্ত থাকে এবং এটি ওয়াচ হারিয়ে গেলে বা চুরি হলে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
এই ফিচারটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে সক্রিয় হয় যখন ওয়াচটি আইফোনের সঙ্গে পেয়ার করেন। তাই শুধু রিসেট করলেই যথেষ্ট নয় অ্যাক্টিভেশন লক বন্ধ করতে অবশ্যই অ্যাপল অ্যাকাউন্ট এবং পাসওয়ার্ড দিতে হবে।
