“আদালত তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।”
হতে সংগৃহিত
গাজীপুরে অন্যের ঠিকাদারি লাইসেন্স ব্যবহার করে কাজ শেষ না করেই অগ্রিম বিল উত্তোলন ও জামানতের অর্থ আত্মসাতের মামলায় বিএনপি নেতা ও এলজিইডির সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলীসহ তিন জনকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
রোববার গাজীপুরের জেলা ও দায়রা জজ মমতাজ পারভীন তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
কারাগারে পাঠানো তিনজন হলেন- কালীগঞ্জ উপজেলার জামালপুর এলাকার জয়নাল আবেদীন খানের ছেলে ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুজ্জামান খান লাভলু (৫২), মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার কামারগাঁও এলাকার কাজী আব্দুস সাত্তারের ছেলে ও এলজিইডির সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী মুজিবুর রহমান (৬৬) এবং নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ পৌরসভার নয়ামাটি এলাকার মুজিবুর রহমানের ছেলে গোলাম মোস্তফা (৫৫)।
মামলার বাদী কাপাসিয়ার খিলগাঁও ফুলবাড়ীর মোফাজ্জল হোসেন খানের ছেলে এম এ ওহাব খান। যিনি কাপাসিয়ার দুর্গাপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও ‘মেসার্স ধীমান কনস্ট্রাকশন’ প্রতিষ্ঠানের মালিক।
মামলার বিবরণে বলা হয়, ২০১৯ সালে এলজিইডির তৎকালীন নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী মুজিবুর রহমানের সঙ্গে বাদী এম এ ওহাব খানের পরিচয় এবং এক পর্যায়ে সখ্যতা গড়ে ওঠে। মুজিবুর এলজিইডি কনসালটেন্ট হিসেবে কক্সবাজারে কর্মরত অবস্থায় ওহাবের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ধীমান কনস্ট্রাকশনের লাইসেন্স ব্যবহার করে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
এরপর ২০১৯ সালের ৪ ডিসেম্বর কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার একটি টেন্ডারে অংশ নিয়ে প্রায় ৪ কোটি ১০ লাখ ৫৩ হাজার ৬৩৮ টাকা বরাদ্দের একটি প্রকল্পের কাজ পান। প্রকৃতপক্ষে কাজের অগ্রগতি হয় মাত্র ১ কোটি ৩ লাখ ৮৭ হাজার ৩১৫ টাকার। বাকি টাকা ফেরত না দিয়ে আসামিরা কাজ বন্ধ করে দেন। এ নিয়ে বাদী তাগাদা দিলে তাকে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়।
এরপর ২০২৩ সালের ২২ সেপ্টেম্বর বাদী ওহাব খান গাজীপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ এ প্রতারণা, অর্থ আত্মসাত ও হত্যার হুমকির অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে নির্দেশ দেন।
২০২৪ সালের ৮ জুলাই তৎকালীন জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই মো. শহীদুল ইসলাম মোল্লা আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। তাতে বলা হয়, আসামিরা চুক্তির চেয়ে বেশি অর্থ উত্তোলন করেছেন, তা ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানান এবং বাদীকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেছেন। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।
তদন্ত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে আদালত আসামিদের সমন জারি করে। এরপর আসামিরা গত ১৭ অগাস্ট হাইকোর্ট থেকে চার সপ্তাহের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পান। তবে নির্ধারিত সময় শেষে তারা আদালতে আত্মসমর্পণ করেননি।
রোববার তিন আসামি গাজীপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে আদালত তা নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
গাজীপুর আদালতের ভারপ্রাপ্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. হাফিজ উল্লাহ দর্জি বলেন, “রোববার তিন আসামি আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন। আদালত তাদের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।”
