শামসুল আলমের অভিযোগ, তার ‘বঞ্চনার পেছনে সদ্য সাবেক জনপ্রশাসন সচিব মো. মোখলেস উর রহমানের ‘হাত রয়েছে’।
হতে সংগৃহিত
জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মোখলেস উর রহমানকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে সরানোর পর ফেইসবুকে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন অবসরে যাওয়া জ্যেষ্ঠ সচিব শামসুল আলম, যিনি দুদিন আগে গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব দেওয়ার বিনিময়ে মোটা অংকের টাকা লেনদেনের বিস্ফোরক অভিযোগ সামনে এনেছিলেন।
নবম বিএসএসের মাধ্যমে প্রশাসন ক্যাডারে যোগ দেওয়া শামসুল আলম সাবেক বিএনপি সরকারের সময়ে তখনকার প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার এপিএস ছিলেন। পরে শেখ হাসিনার আমলে দীর্ঘদিন তিনি পদন্নোতিবঞ্চিত ছিলেন।
আওয়ামী লীগের সরকার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত সময়ে দুটি পদন্নোতি দিয়ে শামসুল আলমকে জ্যেষ্ঠ সচিব করেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রত্যাশা অনুযায়ী গুরুত্বপূর্ণ কোনো দায়িত্ব তিনি পাননি। গত মার্চে তাকে পিএলআরে চলে যেতে হয়।
শামসুল আলমের অভিযোগ, তার এই ‘বঞ্চনার পেছনে সদ্য সাবেক জনপ্রশাসন সচিব মো. মোখলেস উর রহমানের ‘হাত রয়েছে’।
গত ২০ সেপ্টেম্বর ‘কোটি কোটি টাকার সচিব!!!’ শিরোনামে একটি লেখা ফেইসবুকে পোস্ট করেন শামসুল আলম। সেখানে তিনি অভিযোগ করেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে ‘নগদ টাকায়’ সচিব হওয়া যায়, এর অনেক ‘প্রমাণ’ তিনি নিজেই জানেন। কারো নাম প্রকাশ না করে কিছু ঘটনার কথাও তিনি পোস্টে তুলে ধরেন।
এর পরদিন মোখলেস উর রহমানকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়। বদলির এই আদেশ ‘অবিলম্বে’ কার্যকর করার কথা বলা হয় প্রজ্ঞাপনে।
রোববার ফেইসবুকে আরেক পোস্টে শামসুল আলম লেখেন, “অবশেষে জনপ্রশাসন থেকে মোকলেস আউট।”

সোমবার যোগাযোগ করা হলে শামসুল আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তার মন্ত্রিপরিষদ সচিব হওয়ার ‘কথা ছিল’, কিন্তু ‘মোখলেসুর রহমানসহ ৮২ ব্যাচের কর্মকর্তাদের কারণে’ বিষয়টি আটকে যায়।
তবে টেলিফোনে এ বিষয়ে আর বিস্তারিত বলতে চাননি এই সাবেক সচিব। তিনি বলেছেন, ফেইসবুকে যা বলেছেন, সেটাই তার বক্তব্য।
অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে মোখলেস উর রহমানকে ফোন করা হলে তিনি ধরেননি। হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠানো হলেও সাড়া দেননি।
বর্তমান মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আবদুর রশিদের সঙ্গেও কথা বলার চেষ্টা করেছে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। তিনি ও ফোন ধরেননি। বার্তা পাঠালেও সাড়া দেননি।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের অন্য কেউ এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
কী লিখেছিলেন শামসুল আলম?
গত ২০ সেপ্টেম্বর শামসুল আলম তার ফেইসবুক পোস্টে লেখেন, “বর্তমান সরকারের সময়ে নগদ টাকায় সচিব হয়, এটা কোনো বাজে কথা নয়। চ্যালেঞ্জ করবেন না। এর প্রমাণ আমি নিজেই জানি।”
প্রথম ঘটনায় তিনি নিজের ‘মন্ত্রিপরিষদ সচিব হওয়া আটকে যাওয়ার’ অভিযোগটি লিখেছেন। এরকম আটটি ঘটনা তুলে ধরে তিনি লিখেছেন, “আর কয়টা বলব? কাজেই এই সরকারের সময়ে টাকা দিয়ে, অর্থাৎ কোটি কোটি টাকা দিয়ে সচিব হয়, এটা কোনো মিথ্যা কথা নয়। সত্য কথা। সম্পূর্ণ সত্য কথা। এভাবে একটা দেশ চলতে পারে না।”