“ফাইলগুলো দুই বছর ধরে ঝুলে আছে। নভেম্বরের আগেই সব ওষুধের নিবন্ধন সম্পন্ন হোক, যেন সেগুলোর ওপর ট্রিপস আইন প্রযোজ্য না হয়।”
Published : 03 Aug 2025, 12:05 AM
‘অপেক্ষায় থাকা’ প্রায় এক হাজার নতুন ওষুধে দ্রুত নিবন্ধন দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ঔষধ শিল্প সমিতি।
সমিতির নেতারা বলছেন, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর নিবন্ধন প্রক্রিয়া শেষ না করলে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার ট্রিপস চুক্তি অনুযায়ী উচ্চ হারে রয়্যালটি দিতে হবে। এতে দেশের বাজারে ওষুধের দামও বেড়ে যাবে।
শনিবার ঢাকার তেজগাঁওয়ে বাংলাদেশ ঔষধ শিল্প সমিতিতে এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন ওষুধ শিল্প মালিকরা। বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম এ সভা আয়োজন করে।
সমিতির মহাসচিব মো. জাকির হোসেন বলেন, বাংলাদেশ ২০২৬ সালের ২৪ নভেম্বর উন্নয়নশীল দেশের কাতারে যাচ্ছে। তবে বাংলাদেশ আরেকটি আন্তর্জাতিক চুক্তি— নভেলিটি কনভেনশনে সই করেছে। এ কারণে ২০২৫ সালের নভেম্বর থেকেই নতুন ওষুধের ক্ষেত্রে ট্রিপস চুক্তি পুরোপুরি মানতে হবে।
“নভেলিটি কনভেনশন অনুযায়ী, পৃথিবীতে যদি কোনো ওষুধ পেটেন্ট করা থাকে, আবিষ্কার হওয়ার প্রথম বছরে ওই ওষুধ পৃথিবীর কোথাও আনা যাবে না। সেটা ট্রিপস ওয়েভারেও আনতে পারবেন না। তাহলে দেখা যাচ্ছে, ২০২৬ সালের নভেম্বরের আগে, অর্থাৎ ২০২৫ সালের নভেম্বর মাসে যে পেটেন্ট হবে, আমি কিন্তু আর ওই ড্রাগটা আনতে পারব না।”
তিনি বলেন, “আমরা এতদিন জানতাম আমাদের হাতে আর এক বছর তিন-চার মাস সময় আছে। সত্যিকার অর্থে এখন সাড়ে তিন মাস সময়ও নাই। যদি নভেলটি কনভেনশন আরোপ হয়, তাহলে আপনি নতুন করে আর আনতে পারবেন না। এতে নতুন ওষুধ আনতে কোম্পানিগুলোকে উচ্চ হারে রয়্যালটি দিতে হবে।”
জাকির হোসেন বলেন, ঔষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরে প্রায় ১ হাজারটি ওষুধ নিবন্ধনের অপেক্ষায় আছে। এর মধ্যে ৭১৫টির ফাইল ওষুধ প্রশাসন এখনো দেখেনি। প্রায় ৪০০টি ওষুধ আনার বিষয়ে সুপারিশ করা হলেও বাকিগুলোর বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেই।
“এই ফাইলগুলো দুই বছর ধরে ঝুলে আছে। নভেম্বরের আগেই সব ওষুধের নিবন্ধন সম্পন্ন হোক, যাতে সেগুলোর ওপর ট্রিপস আইন প্রযোজ্য না হয়।”
এলডিসি থেকে উত্তরণের ফলে শুধু ওষুধশিল্প নয়, গোটা দেশই ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মন্তব্য করেন রেনাটার ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ কায়সার কবির।
তিনি বলেন, “এলডিসি থেকে উত্তরণের সময়সীমা আরও দীর্ঘায়িত কীভাবে করা যায়, সে বিষয়টি নিয়ে ভাবা উচিত।
“এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনে আমরা যাচ্ছি, এতে আমাদের সম্মান অনেক বাড়বে। কিন্তু এর প্রভাব কী হবে, সেটাও আমাদের দেখতে হবে। এজন্য সস্তা ঋণ, পেটেন্ট ছাড়, ট্রিপস সুবিধা হারাতে হবে। এ উত্তরণ যেন বিলম্বিত হয়, সেটিই এখন সবচেয়ে জরুরি।”
সভায় অন্যদের মধ্যে ইউনিমেড-ইউনিহেলথের চেয়ারম্যান এম মোসাদ্দেক হোসেন, বাংলাদেশ ঔষধ শিল্প সমিতির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এম মোসাদ্দেক হোসেন, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ মুহাম্মদ হালিমুজজামান ও সদস্য মো. আব্দুর রাজ্জাক উপস্থিত ছিলেন।