সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার সড়কের বাজার এলাকার দুটি কলেজ একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির এই চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ ওঠেছে।
Published : 07 Aug 2025, 10:03 AM
সদ্য এসএসসি পাস করেছেন সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার সড়কের বাজার এলাকার সাবরিনা আক্তার রিমা। কলেজে ভর্তির জন্য অপেক্ষা করছেন তিনি। ২১ জুলাই ‘সড়কের বাজার মহিলা কলেজ’ নামে সদ্য গজিয়ে উঠা নামে একটি প্রতিষ্ঠান এসএসসি পাস কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সেখানে সাবরিনা আক্তার রিমাকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে তাকে একটি ফরম দেওয়া হয় পূরণ করার জন্য। সেদিনই তিনি জানতে পারেন, তার উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তির জন্য আবেদন করা হয়ে গেছে। অথচ তিনি নিজে কোনো আবেদন করেননি।
সাবরিনা আক্তার রিমা বলছিলেন, “সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের সময় একটি ফরমে নাম, মোবাইল নম্বর নেওয়া হয়েছিল। আমরা ফরম পূরণ করে বাড়িতে চলে যাই। পরে বিকালে কলেজ থেকে মোবাইলে কল করা বলা হয় রেজিস্ট্রেশন কার্ড, মা-বাবার আইডি কার্ডের ফটোকপি, নিজের দুই কপি ছবি দেওয়ার জন্য।
“পরে আমরা তাদের কাছে কাগজপত্র এনে দিয়েছি, তখনও আমরা পরিবারের কাউকে বলিনি। পরে পরিবারকে জানাই। পরিবার গিয়ে কলেজকে বলে। তখন তারা বলে, আবেদন করে দিছে। পরে আমরা ২৯ জুলাই কলেজে এসে বলেছি যে, আমরা এখানে ভর্তি হব না। বাড়িতে গিয়ে আবার তাদের কল করে জানিয়েছি যে, আমরা এখানে ভর্তি হব না। তারপরও তারা আমাদের নামে আবেদন করে দিয়েছে।”
রিমা আরও বলেন, “পরে আমরা কলেজে এসে বলেছি, আমাদের আবেদন কার্ড, পাসওয়ার্ড দেওয়ার জন্য। তারা বলছে, ২০ তারিখের পরে দেবে। তারা জোর করে আমাদের ভর্তির আবেদন করে নিয়েছে। এখন তারা বলে, ভর্তি হলে আমাদের গাইড দেবে, আরও কতকিছু দেবে।”
‘সড়কের বাজার মহিলা কলেজ’ কর্তৃপক্ষের ভর্তির আবেদনের ব্যাপারে একই ধরনের অভিজ্ঞতার কথা বলছিলেন শিক্ষার্থী সাজেদা বেগম ও তানিয়া আক্তার তান্নি।
এভাবে শিক্ষার্থী ভর্তির আবেদন করলেও ‘সড়কের বাজার মহিলা কলেজ’ নামের প্রতিষ্ঠানটির পাঠদান সনদ, স্থাপনা সনদ, দূরত্ব সনদ, পরিচালনা পর্যদসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট প্রয়োজনীয় কোনো অনুমতিই নেই। কোনো অনুমতি না থাকার পরও তারা শিক্ষার্থী ভর্তির প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
যদিও সড়কের বাজার মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম বলছেন, তারা এসব অনুমতির জন্য আবেদন করেছেন। হয়ত এ বছরের মধ্যেই সব পেয়ে যাবেন। এখন অন্য কলেজের নামে শিক্ষার্থী ভর্তির আবেদন নিচ্ছেন।
‘সড়কের বাজার মহিলা কলেজে’র মত একইভাবে শিক্ষার্থী ভর্তির চেষ্টা করছে ‘সড়কের বাজার ইউনাইটেড কলেজ’ নামে আরেকটি প্রতিষ্ঠান। তাদেরও কোনো অনুমতি নেই। এবং দুটি প্রতিষ্ঠান পাশাপাশি মার্কেটের মধ্যে কক্ষ ভাড়া নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে।
নিয়ম-নীতি
চলতি বছরের ১৩ জুলাই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের বেসরকারি শাখা মাধ্যমিক-১ শাখার উপ-সচিব মো. মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত নীতিমালার চিঠিতে বলা হয়েছে, “মফস্বল এলাকায় নতুন কলেজ স্থাপনে একটি প্রতিষ্ঠান থেকে অপর প্রতিষ্ঠানের দূরত্ব চার কিলোমিটার হতে হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রদত্ত দূরত্ব সনদ ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রদত্ত জমির সনদ এবং উপজেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তা প্রদত্ত জন্যসংখ্যার সনদ সংযুক্ত করতে হবে। আর ওই এলাকার জন্যসংখ্যা হবে ৭৫ হাজার।”
আর ২৪ জুলাই মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপ-সচিব মো. আ. কুদ্দুস স্বাক্ষরিত একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির নীতিমালায় বলা হয়েছে, “অনুমতি বা স্বীকৃতিবিহীন কলেজ/সমমানের প্রতিষ্ঠানে ভর্তি নিষিদ্ধ। স্থাপনের অনুমতি আছে কিন্তু পাঠদানের প্রাথমিক অনুমতি নেই এরূপ কলেজ/সমমানের প্রতিষ্ঠান কোনো অবস্থাতেই ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করাতে পারবে না।”
এই পরিপ্রেক্ষিতে সিলেটের গোয়াইনঘাটের ‘সড়কের বাজার মহিলা কলেজে’ এবং ‘সড়কের বাজার ইউনাইটেড কলেজ’ নামের দুটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ভর্তির চেষ্টার ব্যাপারে জানতে চাইলে সিলেট শিক্ষাবোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক সৈয়দ মোয়াজ্জম হুসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দুটি প্রতিষ্ঠান স্থাপনা ও পাঠদানের অনুমতির জন্য আবেদন করছে বলে আমার জানা নেই। তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্থাপনা ও পাঠদানের অনুমতি ছাড়া কলেজ কর্তৃপক্ষ কলেজ কোড বা ইন নম্বর (ইআইআইএন- এডুকেশনাল ইনস্টিটিউট আইডেন্টিফিকেশন নম্বর) পাবে না। আর ইন নম্বর ছাড়া ভর্তি নেওয়া যাবে না। এখন সবকিছু অনলাইনে করতে হয়।”
শিক্ষার্থীদের ‘প্রতারণার মাধ্যমে’ ভর্তির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে শিক্ষাবোর্ডের কলেজ পরিদর্শক বলেন, “যদি কোনো শিক্ষার্থী মনে করেন, তার আবেদন করা হয়েছে; তবে সেটি বাতিল করতে পারবেন। নতুন করে আবেদন করতে পারবেন।”
৩০ জুলাই থেকে সারাদেশে কলেজে ভর্তির জন্য অনলাইনে আবেদন শুরু হয়েছে। শিক্ষার্থীরা আবেদনে পাঁচ থেকে ১০টি কলেজের নাম দিতে পারছেন।
পাশাপাশি দুই মার্কেটে দুই উচ্চ শিক্ষার প্রতিষ্ঠান
সোমবার দুপুরের দিকে কানাইঘাটের সড়কের বাজার এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বহুতল শাহজাহান কমপ্লেক্সের সামনে ও প্রবেশ পথে সাইনবোর্ডে লেখা আছে ‘সড়কের বাজার ইউনাইটেড কলেজ’। প্রবেশ পথটি সরুই। প্রবেশ পথের একটি অংশজুড়ে রয়েছে একটি মোবাইল ফোনের দোকান। আর ভবনের সামনে রাখা আছে বালু আর ইটের খোয়া। ভবনটিতে নির্মাণ কাজ চলতে দেখা গেছে।
ভবনের নিচতলার একটি দোকানে গিয়ে কলেজের কার্যালয় কোথায় জানতে চাইলে তিনি ‘দাঁড়ান’ বলে একজনকে মোবাইলে ফোন দেন। তখন সেখানে আসেন ফারুক আহমদ। তিনি নিজেকে সড়কের বাজার ইউনাইটেড কলেজের পরিচালক বলে পরিচয় দেন।
পরে ফারুক আহমদ ভবনের নিচতলায় কলেজের অফিস কক্ষে নিয়ে যান। নিচতলায় একটি শ্রেণিকক্ষের মত রয়েছে। কলেজের আর কোনো কর্মকর্তা বা শিক্ষার্থীর দেখা মেলেনি।
শাহজাহান কমপ্লেক্সের পশ্চিমে সুরভী টাওয়ার। তিনতলা এই ভবনের সামনে ইট-পাথর ও কংক্রিট রাখা। দ্বিতীয় তলার প্রবেশ মুখে রয়েছে কলেজের সাইনবোর্ড। দ্বিতীয় তলায় উঠে একটি শ্রেণিকক্ষ প্রস্তুত করে রাখা দেখা গেছে। তবে কোনো শিক্ষক-শিক্ষার্থী বা অফিসের কাউকে দেখা যায়নি।
শ্রেণিকক্ষের পাশে অধ্যক্ষের কক্ষ। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, অধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম দুজনের সঙ্গে বসে কথা বলছিলেন।
‘আবেদন করে দিছে, এখন কাগজ দিতে পারছে না’
কলেজ অধ্যক্ষের কক্ষে একটু সময় বসে বোঝা গেল, এক ছাত্রী তার নিকটাত্মীয় ভাইকে নিয়ে এসেছেন। ওই ছাত্রীর ভর্তির জন্য আবেদন করা হয়েছে; কিন্তু কোনো কাগজপত্র তাদের দিতে পারছে না।
সাংবাদিক পরিচয় জানার পর ওই যুবক অধ্যক্ষের সামনে এ নিয়ে কথা বলতে চাচ্ছিলেন না। পরে মোবাইল ফোনে তিনি বলেন, “আমার আপন ফুফাত বোনের আবেদন করেছে মহিলা কলেজের লোকজন। কিন্তু তারা কোনো কাগজপত্র দিতে পারছে না। বৃহস্পতিবার (৭ অগাস্ট) কাগজপত্র দেবে বলেছে তারা। দেখি তারা কাগজপত্র দিতে পারে কি-না; তা না হলে আমি আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করব।”
ভর্তির আবেদনের কাগজপত্র না পাওয়ার কথা জানিয়েছেন সাবরিনা আক্তার রিমার বড় বোন রসমা বেগমও। তিনি সড়কের বাজার মহিলা কলেজ কর্তৃপক্ষের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমি নিজে কলেজে গিয়ে কাগজপত্র চাই। তাই স্যার কাগজপত্র না দিয়ে বলেন, আমরা তো আবেদন করে দিয়েছি। তারা আমাদের ফোন দিয়ে নিয়ে বলেন, আমরা কেন কাগজপত্র দিলাম? তখন আমি বলি, অনুষ্ঠানের দাওয়াত পেয়ে আমার বোন না বুঝে দিয়েছে কাগজপত্র, এটা আমাদের ভুল হয়েছে। পরে বলেছি, পাসওয়ার্ডটা দেওয়ার জন্য। তখন স্যার বলেন, এখন দেওয়া যাবে না। ২২ তারিখের পরে।”
বুধবার বিকালে মোবাইল ফোনে শিক্ষার্থী মাহমুদা বেগম বলেন, “১ অগাস্ট সড়কের বাজার মহিলা কলেজ থেকে তিন স্যার আমাদের বাড়িতে আসেন। এর মধ্যে একজন মিজবাহ ইসলাম চৌধুরী। স্যাররা এসে আমার আম্মা ও আমার সঙ্গে ভর্তি হাওয়ার বিষয়ে কথা বলেন।

“তখন আমি বলেছি, আব্বা বাহিরে আর ভাই বিদেশ; তারার সাথে পরামর্শ করে ভর্তির আবেদন করব। তখন স্যাররা আমার অ্যাডমিট কার্ড নিয়ে যান। এ সময় আমি বার বার তাদের বলেছি আমি এখানে ভর্তি হব না।
মাহমুদা বেগম বলেন, “পরে বিকালে কলেজ থেকে কল করা বলা হয়, আমার ভর্তির আবেদন করা হয়েছে। আজকে আমি কলেজে গিয়েছিলাম অ্যাডমিট কার্ড আনতে। তখন স্যার একজন বলেছেন, অ্যাডমিট কার্ড সিলেট। সিলেট থেকে চলে আসলে কার্ড দেওয়া হবে।”
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে সড়কের বাজার মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম বলেন, “আমাদের সব আবেদন করা হয়েছে। আগামী ডিসেম্বর মাসের মাঝে আমরা অনুমোদন পেয়ে যাব বলে আশা করছি। প্রতিষ্ঠানের স্থাপনা সনদ, পাঠদান অনুমতি, ইন নম্বর (কলেজ কোড নম্বর) পেয়ে গেলে নিজের প্রতিষ্ঠানের নামে আবেদন করা যাবে। বর্তমানে অন্য কলেজের মাধ্যমে ভর্তি আবেদন করা হচ্ছে বিজ্ঞান ও মানবিক বিভাগে।
এখন পর্যন্ত কতজন ভর্তির আবেদন করেছে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ বলেন, “তার সঠিক হিসাব বর্তমানে আমার কাছে নেই। আপাতত বেতন ও ভর্তি ফি কনর্ফাম হওয়ার পর আমরা নেব। আমরা অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে টাকার বিষয়টা নির্ধারণ করব। তবে আমাদের এখানে ভর্তি ফি ৩৫০০ টাকা আর মাসিক বেতন ৮০০ টাকা ধরা হয়েছে।”
তিনি বলেন, “শিক্ষার্থীরা নিজে এসে ভর্তির আবেদন করেছে। এখানো কোনো প্রতারণা করা হয়নি।”
প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য যে কমিটি গঠন করা হয় তার অনুমতি নিতে হয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে। সড়কের বাজার মহিলা কলেজের পরিচালনা পর্যদের এমন কোনো অনুমতি নেই। তারপরও সেখানে গভর্নিং বডি রয়েছে।
সেই কথিত গভর্নিং বডির সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলম। তিনি ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা সহকারী (ইউএফপিএ) পদে কর্মরত আছেন। তিনি বলেন, “নতুন প্রতিষ্ঠান হলে এভাবেই হয়। আমাদের সবকিছু আবেদন করা হয়েছে বোর্ডে। আমাদের গভর্নিং বডি অনুমোদনের আবেদনও করা হয়েছে।”
শিক্ষার্থীদের না জানিয়ে ভর্তির আবেদন করার বিষয়ে তিনি বলেন, “ভর্তির এই বিষয়টা আমি জানি না। এগুলো মিথ্যা।”
‘ইউনাইটেড কলেজে ৩৫ জনের ভর্তি’
স্থাপনা সনদ, পাঠদান অনুমতিসহ কোনো বিষয়েই অনুমতি না থাকলেও এরই মধ্যে ৩৫ শিক্ষার্থীকে ভর্তির কথা জানিয়েছেন সড়কের বাজার ইউনাইটেড কলেজের পরিচালক ফারুক আহমদ।
তিনি বলেন, “কলেজের কার্যক্রম চালানোর জন্য আপাতত কাগজ আনা হয়েছে। এখন পর্যন্ত বিজ্ঞান ও মানবিক বিভাগে ৩৫ জনকে ভর্তি (আবেদন) করা হয়েছে। পাঠদানের জন্য ১১ জন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা তিন হাজার টাকা ভর্তি ফি, মাসিক বেতন ৫০০ টাকা নিচ্ছি।”
এসব বিষয়ে জানতে কলেজ পরিচালনা কমিটির সদস্য প্রভাষক শিহাব উদ্দিনের সঙ্গে কথা বলার জন্য বলেন পরিচালক ফারুক আহমদ।
তবে কলেজ পরিচালনা কমিটির সদস্য নন বলে জানিয়েছেন কানাইঘাট সরকারি কলেজের সমাজবিজ্ঞানের প্রভাষক শিহাব উদ্দিন। তিনি কানাইঘাট উপজেলারই বাসিন্দা।
তিনি বলছিলেন, “আমি এই কলেজের সঙ্গে জড়িত না। তবে আমি এলাকার লোক হিসেবে তাদের একটি অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম। তখন আমার কাছ থেকে তারা জানতে চেয়েছিল, কিভাবে প্রতিষ্ঠান চালানো যায়। আমি তাদের বলেছি শিক্ষাবোর্ডে যোগাযোগ করতে।”
কথিত কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি মোহাম্মদ বশির আহমদ বলেন, “আমাদের গভর্নিং বডির অনুমোদন শিক্ষাবোর্ডের নেই। আমাদের সবকিছু রেডি আছে। আমরা অনুমতির জন্য আবেদন করেছি শিক্ষাবোর্ডে। বর্তমানে আমাদের প্রতিষ্ঠানে যে শিক্ষার্থীরা ভর্তির জন্য আসতেছে, তাদের শাহবাগ কলেজসহ অন্য কলেজের মাধ্যমে আবেদন করা হচ্ছে।”
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সড়কের বাজার ইউনাইটেড কলেজের কথিত গভর্নিং বডির সভাপতি মোহাম্মদ বশির আহমদ একই সঙ্গে শাহবাগ হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্বেও রয়েছেন।
সড়কের বাজার ইউনাইটেড কলেজের কথিত গভর্নিং বডির সভাপতি অধ্যক্ষ হিসেবে ময়নুল হক চৌধুরীর নাম বলেন। যদিও ময়নুল হক বলেন, “আমি এখনও লিখিতভাবে কলেজের দায়িত্ব নেইনি।”
তবে তিনি কলেজের শিক্ষার্থী ভর্তির আবেদন বিষয়ে অবগত বলেই মনে হল। তার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “কলেজ কর্তৃপক্ষ বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা করে নিচ্ছেন।”
প্রশাসনের বক্তব্য
দুটি কলেজের ব্যাপারে জানতে চাইলে কানাইঘাট উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “ওই এলাকায় একটি এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠান আছে। আমাদের জেলা কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, ওইখানে আরও দুটি প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়ম-নীতি মেনে গড়ে তোলার জন্য আমি তাদের বলে দিয়েছে।
“উনারা এখনো স্থাপনার অনুমতি নেননি। আমি ইউএনও স্যারকে বিষয়টি মৌখিকভাবে জানিয়েছি। তবে এই বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ কেউ করেনি। পরীক্ষা চলার কারণে আপাতত আমার ওই দুটি প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনে যাওয়ার মত সময় নেই।”
কানাইঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানিয়া আক্তার বলেন, “শিক্ষার্থী ভর্তির বিষয়টি নিয়ে শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষ দেখবে। দূরত্ব সনদের বিষয়ে আবেদন করা হয়েছে, বিষয়টি যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।”